মোঃ ছিপু মোল্লা, বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতাঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান। আন্দোলন সম্পর্কে মিথ্যাচার এবং আন্দোলন দমনে প্রশাসনকে ব্যবহার করার অভিযোগ নিয়ে আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসনকে স্বসম্মানে পদত্যাগ করতে অনুরোধ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
রবিবার(১১আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বশেমুরবিপ্রবি সমন্বয়কদের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ই জুন থেকে শুরু হওয়া বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। প্রশাসনের এ তৎপরতা শুরুর দিকে আন্দোলন সম্পর্কে নানাবিধ মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। গত ১৬ জুলাই থেকে বশেমুরবিপ্রবি সহ সারা দেশে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টনক নড়ে। আন্দোলন দমনে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নতুন কৌশল গ্রহণ করে। ঐ সময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা যাতে উপস্থিত হতে না পারে, তাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতে শুরু করে বলে জানা যায়।
সমন্বয়কদের সূত্রে জানা যায়, গত ১৭জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যেন কফিন মিছিল নিয়ে নির্মানাধীন প্রধান ফটক পর্যন্ত যেন যেতে না পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বাঁধা দিতে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের তুমুল প্রতিবাদের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গায়েবানা জানাজা প্রধান ফটকে আয়োজন করতে দিতে বাধ্য হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ফাঁকা করে দিতে ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর বিশাল বহরকে আমন্ত্রন জানায়। এবং তাদের মোতায়েন রেখে নির্দয়ভাবে স্বল্প সময়ের বিবৃতিতে মাইকিং করে নিরাপরাধ শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী লাঞ্চিত করেন। তার সাথে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। এবং আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান খানকে প্রহার করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
সমন্বয়করা বলেন, বিপ্লবী ছাত্র-সমাজের মতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই প্রশাসনের সকল অংশীদার (উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি, প্রভোস্ট বডি, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা সহ সকলে) আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সসম্মানে পদত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমূল সংস্কার করার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবেন বলে আশা রাখি। সেই সাথে ক্যাম্পাসের বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি (পূর্ববর্তী কোনো ভারপ্রাপ্ত ভিসি এবং তার দোসরেরা) যেনো ভিসি হওয়ার খোয়াব না দেখে সেই ব্যাপারে সতর্ক বার্তা দেওয়া হলো।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বশেমুরবিপ্রবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান খান বলেন, আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বশেমুরবিপ্রবি এর পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিরোধী প্রশাসনের পদত্যাগের ব্যাপারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। আমরা আশাকরি, এর মধ্যেই প্রশাসন পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। নয়তো আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। আর সবশেষে সবার কাছে আমাকে যারা মেরেছিল তাদের বিচার দাবি করছি।