সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / ১৬ উপদেষ্টা নিয়ে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু
Oplus_0

১৬ উপদেষ্টা নিয়ে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু

 

সদরুল আইনঃ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বঙ্গভবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

এদিন দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরেন ড. ইউনূস। তাকে স্বাগত জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, অন্য দুই বাহিনীর প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

অলিম্পিক কমিটির আমন্ত্রণে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্যারিসে গিয়েছিলেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন, তার একটি ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছে।

ঢাকায় ফিরে প্রথম বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাই হবে আমার প্রথম কাজ। কারও ওপর কোনো হামলা যেন না হয়। দেশবাসী যদি আমার ওপরে বিশ্বাস রাখেন, ভরসা রাখেন, তাহলে নিশ্চিত করেন দেশের কোনো জায়গায় কারও ওপর হামলা হবে না।

তিনি বলেন, আজ আমাদের গৌরবের দিন। যে বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বিজয় দিবস সৃষ্টি করল তরুণেরা সেটাকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যারা এটা সম্ভব করেছে, যে তরুণ সমাজ তাদের প্রতি আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে। নতুন করে পুনর্জন্ম দিয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

গত মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ওইদিন রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হবেন ড. ইউনূস।

বঙ্গভবনে শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পড়ান মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর তিনি উপদেষ্টামণ্ডলীর ১৬ জনের মধ্যে ১৩ জনকে উপদেষ্টাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

শপথ অনুষ্ঠানে ফারুক–ই–আজম, ডা. বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা ঢাকার বাইরে থাকার কারণে উপস্থিত ছিলেন না। পরবর্তীতে তাদের শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শপথ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন মো. মাহবুব হোসেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এসময় ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

এসময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ আমন্ত্রিত ৪০০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা পরিষদে যে ১৬ জন রয়েছেন তারা হলেন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

এছাড়াও রয়েছেন: নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, সরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর আ.ফ.ম খালিদ হাসান, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরজাহান বেগম, ব্রতী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ ও ফারুক–ই–আজম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় থাকবেন। তার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। ভেতরে আসবাবপত্র নতুনভাবে বসানো হচ্ছে। এই কাজগুলো করছে গণপূর্ত অধিদফতর (পিডব্লিউডি)।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদ যমুনায় ছি‌লেন।

এর আগে, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান তাদের দায়িত্বের দিনগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনাতেই ছিলেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ আজ : আলোচনায় সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ

  সদরুল আইন: অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ...