বিডি বাংলা রিপোর্টঃ
টানা ১৬ বছর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন।
এ সংবাদ শোনার পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছাত্রজনতার আনন্দ মিছিল করে। ঢাকার রাজপথে চলে কোটি জনতা উল্লাস।
অপরদিকে, টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা ৭০ বছরের পুরোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। পাত্তা নেই এতদিনের প্রভাবশালী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদেরও। যদিও তারা দেশে আছেন, নাকি অন্য কোথাও, তা জানা যায়নি।
আজ সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বঙ্গভবন থেকে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে দেশ ছাড়েন। এরআগে ঢাকার রাজপথে কোটি জনতা শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকারীদের ‘এক দফা এক দাবি—খুনি হাসিনা কবে যাবি’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই—খুনি তোর রক্ষা নাই’, ‘এক দুই তিন চার—খুনি হাসিনা গতি ছাড়’, ইত্যাদি স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা রাজপথ।
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নিজ নিজ এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ এ দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতাপশালী নেতাদেরও খোঁজ মিলছে না।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পলায়নে সন্তোষ প্রকাশ করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার অটোরিকশাচালক লোকমান হোসেন বলেন, ‘ভাই জীবনটা অতিষ্ট করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। গত ১৫ বছর ধরে চাঁদা দিতে দিতে বউ বাচ্চারেও ভালোভাবে দুই বেলা খাবার দিতে পারিনি।’
এদিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরাও পালিয়ে গেছেন কিংবা আত্মগোপনে রয়েছেন। শেখ হাসিনার পলায়নে হতাশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা। তিনি বলেন, ‘নেত্রী আমাদের এভাবে মাঠে একা ফেলে পালিয়ে যাবেন, এটা মেনে নেওয়া তো দূরের কথা বিশ্বাসও করতে পারছি না।
আমরা মনে করতাম, শেখ হাসিনাই আমাদের জীবন ও মৃত্যু। এটাকে তিনি ভুল প্রমাণ করে আমাদের সঙ্গে চরমভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এখন তো আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে গেলাম। আমাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি নিরাপদে পালালেন, এটা কোনো রাজনীতিই হতে পারে না।’