সর্বশেষ সংবাদ
Home / রাজনীতি / আওয়ামী লীগের ক্ষমতা কেন্দ্রে পরিবর্তনের আভাস

আওয়ামী লীগের ক্ষমতা কেন্দ্রে পরিবর্তনের আভাস

 

সদরুল আইনঃ

প্রতিটি গণতান্ত্রিক সরকারে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একটি কিচেন কেবিনেট থাকে। যাদেরকে মনে করা হয় নীতিনির্ধারক।

প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধান এই কিচেন কেবিনেট বা নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন এবং তাদেরকে সবসময় পাশে রাখেন। তারা সরকারের অনেক প্রভাবশালী এবং তাদের মতামত সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে।

এটি সব দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রচলিত। বাংলাদেশে সে অর্থে কোনো কিচেন কেবিনেট নেই। তবে বিভিন্ন সময় ক্ষমতা কেন্দ্রের চারপাশে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে যাদেরকে দেখা যায় তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয় এবং তাদেরকেই নীতিনির্ধারক মনে করা হয়।

২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতা কেন্দ্রে পরিচিত মুখদের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। যেমন ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর কিচেন ক্যাবিনেটে ছিলেন প্রয়াত এইচ.টি ইমাম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মতো নেতৃবৃন্দ। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কিচেন কেবিনেট পাল্টে যায়।

এইচ.টি ইমামরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এসময় ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ নাসিম, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমুরা আবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের কিচেন কেবিনেট চলে যায় আমলাদের দখলে। এসময় ড. আহমেদ কায়কাউস, তৎকালীন ক্যাবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সহ বেশকিছু আমলারা ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন এবং তারাই ছিলেন ক্ষমতা কেন্দ্রের চারপাশে।

বর্তমান সংকটের সময় ক্ষমতাকেন্দ্রে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগের বড় ধরনের বাঁক বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলায় যাদেরকে প্রধানমন্ত্রী চারপাশে বেশি সক্রিয় দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন-

১. সালমান এফ রহমান:

সালমান এফ রহমান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনিতেই তিনি প্রভাবশালী। গত কয়েক বছর ধরেই প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে রয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর অনেক নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাকে দেখা যাচ্ছে। তবে এবার তিনি আরও বেশি সক্রিয় এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রায় সব কর্মসূচিতেই তাকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

২. অ্যাডভোকেট আনিসুল হক:

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা এবং সরকারের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণের বিষয়ে বারবার তাকে ডাকা হচ্ছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনের ক্ষেত্রে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তাদের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

৩. মহিবুল হাসান চৌধুরী:

মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষামন্ত্রী। তিনিও তিন সদস্যের আলোচক দলের সদস্য ছিলেন। তিনি এখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।

৪. মোহাম্মদ আলী আরাফাত:

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে সবচেয়ে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে উপস্থিত থাকছেন এবং নীতি নির্ধারণী নানারকম সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন৷

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়াও এখন সপ্রতিভ। তাকে সব জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সেলিম মাহমুদকে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কর্মসূচিতে এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরাই এখন সরকারের এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন বলে অনেকে মনে করছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে দলীয় কার্যালয়েই বিভিন্ন বক্তব্য এবং বিবৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে আওয়ামী লীগ: হানিফ

  সদরুল আইন: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ...