সর্বশেষ সংবাদ
Home / শিক্ষা / বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাবী আদায়ে আবারও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাবী আদায়ে আবারও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বিপ্লব হোসেন ছিপু,  বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতাঃ
‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবেনা’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে’-স্লোগানে আবারও উত্তাল সড়ক। আপিল বিভাগের রায়ের বিপরীতে পুনরায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। জনদুর্ভোগ কমাতে পুলিশ তৎপর থাকতে দেখা গেছে। তবে রাস্তায় দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। বৃষ্টির মধ্যে রাস্তা অবরোধ করায় তৈরি হয় জনদুর্ভোগ। তবে জরুরি সেবাগুলো অবরোধমুক্ত ছিলে বলে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার(১১জুলাই) ঝুম বৃষ্টির মধ্যে বিকেল সাড়ে চার ঘটিকায় গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময়  বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনে অংশ নিতে এর আগে বিকেল ৪ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের মাইকিং করে ডাকা হয়।
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আদালতের স্থিতাবস্থার ফলে সরকারি চাকরিতে কোটা না থাকলেও নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে কোটা সংস্কার চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ। সরকারি চাকরির সব পদে কোটা সংস্কারের দাবি করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁরা মনে করছেন, এটি সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে দাবি ছিল মূলত ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি) কোটা সংস্কার করা। এবার আন্দোলনকারীরা সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবি করছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, আপিল বিভাগের রায় শুধুমাত্র ৪সপ্তাহ জন্য হলে চলবেনা। আমরা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫%কোটা চাই। এর বেশি আর কোনো কোটা থাকতে পারবেনা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত সোমবার দীর্ঘ দুই ঘন্টা যাবৎ ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় মহাসড়কটিতে দীর্ঘ সময় ধরে যানজট তৈরি হয়। গাড়িতে থাকা যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হয় ।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন রাজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা পড়াশোনা করতে এসছি। আন্দোলন করতে আসিনি। কোটা নামক ভয়ানক অভিশাপের মধ্যে আমাদেরকে কেন আবদ্ধ করা হচ্ছে? সংবিধান যেখানে সমতার কথা বলেছে সেখানে কেন কোটা পদ্ধতি থাকবে? আমরা সমতায় বিশ্বাসী। আমরা মেধার পরিচয় দিয়ে চাকরী পেতে চাই। কোটা দিয়ে কেন চাকরী পেতে হবে!
তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধ আন্দোলন করছিনা। আন্দোলন করছি বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে। পৃথিবীর কোনো দেশে বাংলাদেশের মত কোটা ব্যবস্থা নেই। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক প্রকার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে কি হবে যদি আমাকে কোটার মাধ্যমে যাচাই করা হয়! আমরা এই ব্যবস্থার সংস্কার চাই।
সড়ক অবরোধ নিয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী ওমর শরীফ সরকার বলেন, আমাদের দাবি এক দফা এক। আমরা সমতা চাই। আমরা বৈষম্য চাইনা। পুলিশ দিয়ে আমাদেরকে দমাতে পারবেনা। এমনকি আমরা সাধারন জনগনকে ভোগান্তিতে ফেলতে চাইনা।  আমরা কোটা সংস্কার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, মেধার বিপরীতে যদি কোটা দিয়ে চাকরী পেতে হয় তাহলে আমরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি! আমাদের নানা কিংবা নানীরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, এটা কি আমাদের অপরাধ! আমরা কোটার সংস্কার চাই। তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত কোটার সংস্কার না হবে ততদিন পর্যন্ত এই সড়ক অবরোধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ২ঘন্টা আন্দোলন শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৩০মিনিটে সড়ক ছেড়ে দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে যানজটে আটকে থাকা বাহনগুলো চলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কমতে থাকে জনদুর্ভোগ।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিল না:ঢাবি শিবির সেক্রেটারি

  স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিল ...