বিপ্লব হোসেন ছিপু – বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি::
একদিকে শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমের অন্তর্ভুক্তি থেকে বাতিল, স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির আন্দোলন। অন্যদিকে আপিল বিভাগের রায়ের বিপরীতে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন।
এই দুই আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বশেমুরবিপ্রবি)। শিক্ষক সমিতি জানান, তাদের দাবি পূরন না হলে শ্রেনী কক্ষে ফিরবেনা তারা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার না হলে রাজপথ ছাড়া হবেনা। ফলে বন্ধ হয়ে আছে শ্রেণী কার্যক্রম। শুরু হচ্ছেনা পরীক্ষা।
গত ১জুলাই থেকে তিন দফা দাবি নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফোডারেশন। বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতিও এই দাবির সাথে একমত পোষণ করেছে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। দাবি পূরন না হলে শ্রেণী কক্ষে ফিরবেনা শিক্ষক সমিতি।
গত সোমবার(৮জুলাই) শিক্ষক সমিতির ষষ্ঠ দিনের কর্মবিরতির পর এমন ঘোষণা দেন বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফায়েকুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে প্রত্যয় স্কিমে অর্ন্তভূক্তি থেকে বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি, এই তিন দফা দাবি নিয়ে আমাদের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আমাদের এই তিন দফা দাবি পূরন না হলে শ্রেণী কক্ষে ফেরা হচ্ছেনা।
অপরদিকে, গত শুক্রবার (৫জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিনে গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়ক অবরোধ করে। এরপর ৮জুলাই থেকে সারা দেশের ন্যায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ”বাংলা ব্লকেড” কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার, “রাষ্ট্র মেরামত চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত “-এমন নোটিশ টানিয়ে পুনরায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। টানা দুই দিন বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ থাকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কটি। গতকাল ১০জুলাই বিকেল ৪ঘটিকায় টানা তৃতীয় দিনের মত ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেল ৫ঘটিকায় অবরোধ করে গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়কটি। উভয় সড়ক একসাথে অবরোধ করার তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে থাকে। তবে জরুরি সেবা চলমান থাকতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। যতদিন পর্যন্ত আপিল বিভাগের রায় চার সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে কোটা বাতিল করা হবে, ততদিন পর্যন্ত তারা শ্রেণী কক্ষে ফিরবেনা। এদিকে বুধবার দেশের ৬৪ জেলায় কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতি চলছে। দেশব্যাপি ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের কারনে বন্ধ হয়ে আছে বশেমুরবিপ্রবির সকল কার্যক্রম। অনেক বিভাগের পরীক্ষা চলমান ছিলো। কোনো কোনো বিভাগে পরীক্ষা শুরু হওয়ার রুটিন দেওয়া হয়েছে। কারো কারো পরীক্ষা শেষ কিন্তু আন্দোলনের জন্য মৌখিক পরীক্ষা দিতে পারছেনা। এমন নানাবিধ সমস্যায় জর্জড়িত শিক্ষার্থীরা। কবে নাগাদ এই আন্দোলন শেষ হবে! সেটি নিয়ে দূচিন্তায় রয়েছে তারা। এতে করে সেশনজটের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা যায়।