দৈনিক বর্তমান দেশবাংলা দৈনিক বর্তমান দেশবাংলা
রাজু মিয়া – লালমনিরহাট প্রতিনিধি::
লালমনিরহাটে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র শাহিনুর হত্যা মামলার আসামী পরিবারের লোকজন আসামিদের নির্দোষ দাবী করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার বাদীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এছাড়াও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য রংপুর র্যাব ১৩ বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে শহরের মিশন মোড় এলাকার ফুটভ্যালি নামের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আসামীর পুত্রবধু আইরিন আক্তার আখি বলেন, গত ১৯জুন রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চিনিপাড়া এলাকায় পাকা রোড দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন ৩জন নারী ও ২জন পুরুষ। পথিমধ্যে এনামূল হক নামে একজনকে অন্ধকারে একজন বাইসাইকেল লাগিয়ে দেয়। এতে সে আহত হয়। পরে সঙ্গে থাকা লোকজন অন্ধকারে বাইসাইকেল চালককে দেখতে না পেয়ে আঘাতপ্রাপ্তকে বাশের বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এসময় মামলায় উল্লেখ ১নং আসামী মোতালেব (৫৫) ও ছেলে ২নং আসামী দুলু মিয়া (২৫) উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে ওই সময়ের মধ্যে কে বা কাহারা শাহিনুরকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে চিৎকার শোনে পাশের বাড়ি থেকে কয়েকজন ছুটে এসে দেখেন একই এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে কলেজ ছাত্র শাহিনুর ইসলাম (১৯) পাকা রাস্তায় পড়ে আছে। পড়ে স্থানীয় লোকজন শহিনুরকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থান অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে ৭দিন পর ২৬জুন ওই কলেজ ছাত্র মারা যায়।
এদিকে গ্রামের কয়েকজন লোকের পরামর্শে পরিকল্পিতভাবে জসিমউদদীন নামে এক গ্রামবাসী বাদী হয়ে একই পরিবারের ৪জনের নামে হত্যা মামলা করেন। আসামীরা হলেন মোতালেব (৫৫), ছেলে দুলু মিয়া (২৫), জামাতা এনামুল হক (৩৫) ও জামাতা মিজান মিয়া (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে আসামীর পুত্রবধু আইরিন আক্তার আখি দাবী করে বলেন, আমার পরিবারের ৪ আসামী নির্দোষ। তারা কেউ কলেজ ছাত্র শাহিনুরকে মারধর করেনি। বিনা অপরাধে তাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, নিখুঁতভাবে তদন্ত করলে আসল অপরাধ বেরিয়ে আসবে এবং অসহায় নির্দোষ মানুষ বেঁচে যাবে। তিনি মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
উল্লেখ, নিহত শাহিনুর ইসলাম (১৯) লালমনিরহাট মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চিনি পাড়া এলাকার কাশেম আলির ছেলে। তিনি পৌরসভার শেখ শফিউদ্দিন কমার্স কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র এবং পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স মিস্ত্রী ছিলেন।
এলাকাবাসীরা বলেন, ‘শাহীনুরদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। তার বাবা কাশেম আলী পেশায় একজন ভিক্ষুক। তিনি এখনও ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তারা অনন্য মানুষের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ঘরে থাকে।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, এবিষয় একটি হত্য মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, আসামীরা পালাতক রয়েছে এবং গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
