বিডি বাংলা রিপোর্ট:
মুদ্রাস্ফীতির কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। সে জন্য ঈদ উদযাপন সাধারণ মানুষের কাছে কষ্টের ও কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১৭ জুন) সকালে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের পর দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি তাঁতিপাড়া এলাকায় পৈত্রিক বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন বিএনপির মহাসচিব।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুরো দেশবাসীকে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক। আমি বিশ্ব মুসলিমের অব্যাহত সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করি।
এই ঈদুল আজহা আমাদের ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত করে। এদিন আমরা পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আমাদের মধ্যে যে সমস্ত অশুভ বোধ আছে তা ত্যাগ করি। একই সঙ্গে আমাদের জীবনকে আমরা যেন সুন্দর, সৎ ও পবিত্রতার বোধে রাখতে পারি সে প্রার্থনা করি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদুল আজহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ আজকের সমস্ত দেশেই যেভাবে দুর্নীতি আগ্রাসী হয়ে একটা ব্যাধি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমরা মনে করি আজকে ঈদুল আজহা ত্যাগের মাধ্যমে যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আছেন তারা তা ত্যাগ করবেন।
তাদের সমস্ত অশুভ আকাঙ্ক্ষা বাদ দেবেন। এবং একইসঙ্গে জনগণের জন্য মানুষের কল্যাণে তারা কাজ করবেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এবার ঈদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা কষ্টের দিন। এ জন্যই যে এখন যারা পশু কোরবানি করেন তারা পশুকে যে ক্রয় করতে হয় সেখানেও তারা একটা বড় রকমের মুদ্রাস্ফীতিতে আক্রান্ত হয়েছে।
একইসঙ্গে সাধারণ মানুষ যারা কোরবানি দিতে পারে না তারা বিভিন্নভাবে কোরবানির গোশত সংগ্রহ করে। তাদের পক্ষে তা রান্না করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রান্নার যে সমস্ত মসলা ও অন্য উপকরণগুলো দরকার হয়, এটা তাদের পক্ষে সংগ্রহ করা খুব জটিল এবং কঠিন।
এই অবস্থার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বেড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। এ কারণে ঈদুল আজহা সাধারণ মানুষের জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসেনি ।
এ সব কারণে মানুষ ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম এত বেড়েছে, ঈদে আর সাধারণ মানুষের আনন্দ নেই।
বিএনপি সেন্টমার্টিন নিয়ে যে সমস্ত কথা বলছেন তা গুজব ছড়ানো হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা সব সময় (গণমাধ্যম কর্মী) ওবায়দুল কাদের সাহেবের রেফারেন্স দিয়ে কথা বলেন তো, এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না।
এজন্য পছন্দ করি না যে ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথার জবাব দিতে আমার রুচিতে বাঁধে। যারা রাজনীতি করছেন ক্ষমতায় আছেন যদি সত্যকে উপলব্ধি না করেন, তারা যদি দেশের সমস্যা, গণমানুষের যে আকাঙ্ক্ষা বুঝতে না পারেন, তাহলে তারা কীভাবে শাসক হবেন?
আমরা দেখেছি গত দেড় যুগ ধরে এ দখলদার আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সকল আকাঙ্ক্ষাগুলোকে পদদলিত করে দিয়েছে। জনগণের অধিকারগুলোকে ভোটের অধিকারগুলোকে পদদলিত করে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে পদদলিত করে তারা আজকে জোর করে শাসন ব্যবস্থা জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছে।
শুধু তাদের কথার উত্তর দিতে আমাদের ইচ্ছে করে না এ জন্যই জনগণ এখন তাদের পছন্দ করো না। তারা (আওয়ামী লীগ) এটুকু উপলব্ধি করে না যে জনগণ এখন তাদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে। কারণ তারা এখন শুধু মিথ্যে কথা বলে, প্রতারণা করে জোর করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। এ জন্যই আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা গুরুত্ব দেই না।
এ বিএনপি নেতা বলেন, মিয়ানমার ও সেন্টমার্টিনের বর্তমান ইস্যু আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যে যাই বলুক এটাই সত্য যে সেখানে গোলাগুলি হচ্ছে। এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের সমস্ত জাহাজগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
এই সত্যকে তারা (আওয়ামী লীগ) অস্বীকার করবে কীভাবে। তাদের বিজিবির প্রধান সেখানে যাচ্ছে বারবার। সেনাবাহিনীর প্রধান বারবার বলছেন যে আমরা সতর্ক আছি। তাহলে আমরা (বিএনপি) গুজব ছড়ালাম কোথায়? এটাতো বাস্তবতা যে সেন্টমার্টিনের সঙ্গে মিয়ানমারের ঘটনাবলির একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সেই সমস্যার কারণে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যেতে পারছে না , খাদ্য যেতে পারছে না। সেখানকার যারা অধিবাসী তারা অত্যন্ত কষ্টে মধ্যে দিন পার করছে। তারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। সেই জিনিসটা (আওয়ামী লীগ) স্বীকার না করে। তারা এই সমস্ত কথা বলছে যে সব কথা ভিত্তিহীন, বানোয়াট। এ জন্যই এ সমস্ত কথা আমরা গুরুত্ব দেই না।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, জেলা যুবদলের সভাপতি মেহেবুল্লাহ আবু নূর চৌধুরীসহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।