সর্বশেষ সংবাদ
Home / অন্যান্য / রাজধানীর ওয়ারী জোনের একজন স্মার্ট মেধাবী বিচক্ষণ অফিসার জনাব মধূসুদন দাস এর অশ্রুসিক্ত বিদায়

রাজধানীর ওয়ারী জোনের একজন স্মার্ট মেধাবী বিচক্ষণ অফিসার জনাব মধূসুদন দাস এর অশ্রুসিক্ত বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়ারী জোনের একটা বিশেষ থানা হচ্ছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা বলা যায় ঢাকা প্রবেশের একটা উল্লেখযোগ্য দ্বারপ্রান্ত । এই জোনে কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে কর্মরত বেশকিছু ব্রিলিয়ান্ট অফিসারদের মধ্যে অন্যতম জনাব মধূসুদন দাস । তিনি তার এই জোনে কর্মরত থাকাকালে অনেক ক্লুলেস মামলা তথ্য উপাত্ত উৎঘাটনে অনেক বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র হিসেবে। সহকর্মী হিসেবে যাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তাদের কাছে একজন উর্ধ্বতন সিনিয়র অফিসার একজন শিক্ষক সমতূল্য । যার কাছে অনেক কিছুই লিখেছেন ইয়াং জুনিয়র অফিসাররা ।যেহেতু ডিপার্টমেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বদলি জনিত কারণে যেতে হচ্ছে তাই অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিদায় সত্যি বেদনাদায়ক।এমনটাই লক্ষ করা গিয়েছে উপস্থিত সকলের মাঝেই ।‌
বিদায় শব্দটি বিষাদময় হলেও প্রতিটি মানুষের জীবনচক্রে বারবার ঘুরেফিরে আসে বিদায়ের আবেগঘন মুহূর্ত। যা শুরু হয় তার এক সময় পরিসমাপ্তি ঘটে। আবার প্রত্যেকটা শুরুই অন্য কোন শেষের থেকে হয়। জীবনপথের বাঁকে বাঁকে কত যে বিদায় মুহূর্ত রয়েছে- গৃহ থেকে শুরু করে বিদ্যাপীঠ, কর্মস্থল কিংবা প্রিয়জনের নিকট হতে বিদায়, সবই যেন বেদনাবিধুর।
যাদের কাছ থেকে বিদায় নেয় তারাও আবেগতাড়িত হয়, কখনও অশ্রুসিক্ত হয়। তবে যিনি বিদায় নিচ্ছেন তার আবেগ, অনুভূতি, বেদনা অনেক বেশি। তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন তার এতদিনের স্পর্শ, ভালবাসার কাজ, সৃজনশীলতা, সহপাঠী, সহকর্মী, সহচরদের মধ্যে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের ভালবাসা, কত চেনা মুখ, কি মায়ার বন্ধন, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি, কত খুনসুটি, কারও সঙ্গে কখনও কঠোরতা ও অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি অনেক স্মৃতি। প্রতিষ্ঠান, অফিস, চার দেয়াল, চেয়ার, আসবাবপত্র, সকল কিছুই তাকে মনে করিয়ে দেয় তারাও ছিল এতদিন তারই সাথী।
আজ তিনি চলে যাচ্ছেন- এই পরিবেশ ও প্রকৃতি তাকে দারুণভাবে মর্মাহত করে। স্রষ্টা মানুষকে এই এক নিভৃত অনুভূতি দিয়েছেন উপলব্ধির জন্য। যখন একজন বিদায় নেন তখন তাকে সত্যিই অসহায় মনে হয়, যা কিছু আজ ছেড়ে যাচ্ছেন তার সবই এতদিন তার আপন ছিল। কিন্তু বিদায় মুহূর্তের পর থেকে আর আপন থাকছে না। এমন নাজুক মুহূর্তে তার সহচর, সহকর্মী, সহপাঠীরা এই দিনটি স্মরণীয় করে তুলতে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করে।
প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই সহকর্মীদের মাঝে কমবেশি বিদায় আনুষ্ঠানিকতার রেওয়াজ রয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানের নির্দেশেই মূলত আয়োজন করা হয়। কোথাও সীমাবদ্ধতা থাকলে সহকর্মীদের আন্তরিকতায় তা দূর করা যায়। একজন বিদায়ী ব্যক্তি প্রত্যাশা করেন না কে তাকে কি উপহার দিল, কত ফুল দিল। কিন্তু কতটুকু আন্তরিকতা এবং সম্মান দেখানো হলো তা তার কাছে বিবেচ্য। সমাজে অনেকে আছেন যাদের কাছে এই বিদায় পর্বটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কিন্তু আন্তরিকতা না থাকলে এই আনুষ্ঠানিকতায় তৃপ্তি নেই।
যারা আজ একজনকে বিদায় দিলেন তারাও একদিন বিদায় নেবেন। আজ হয়ত বিদায়ী ব্যক্তির অনুভূতি বুঝতে পারলেন না, কিন্তু যেদিন নিজের বিদায়লগ্ন আসবে সেদিন ঠিকই উপলব্ধি করবেন। বিদায়ের আয়োজন হওয়া উচিত নিঃস্বার্থ, স্বতঃস্ফূর্ততা এবং আন্তরিকতায় ভরপুর। তবে শুধু বিদায় দিয়েই যেন সব শেষ না হয়। যিনি বিদায় নিলেন, তিনি চলে যাওয়ার পর তাকে স্মরণ করুন, শুভেচ্ছা পাঠান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করুন। এর মধ্যেই তিনি খুঁজে পাবেন অনাবিল আনন্দ। হাসিমুখে যাকে বিদায় জানালেন তার স্থলাভিষিক্ত যিনি হবেন তিনি যেন ওই পদে অধিষ্ঠিত হয়েই তার ব্যর্থতাকে তুলে না ধরেন।
এই এতদিন যে মানুষগুলো আশপাশে ছিল, কাজে-আড্ডায় তার চারদিকে ঘোরাঘুরি করত, আজ তারা কেউ নেই পাশে। এ রীতিমতো বিয়োগান্তক। যারা বদলি হয়ে চলে যান তারা হয়ত নতুন কাজের, নতুন মানুষের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, দ্রুত খাপ খাইয়ে নেন। কিন্তু যে ব্যক্তি দীর্ঘকালের কর্মব্যস্ত জীবন শেষে অবসর নিলেন, কাজ নেই, ব্যস্ততা নেই, অলস সময়ে বারবার স্মৃতিতে ভেসে আসে তার জীবনের জমা হওয়া বর্ণাঢ্য ও স্মৃতিময় নানা ঘটনা, সুদীর্ঘ কর্মময় জীবন এবং শেষ বিদায়ের মুহূর্ত। তাই বিদায়ের দিনে বিদায়ী ব্যক্তি যেন সিক্ত হয় সকলের আন্তরিক ভালবাসায়। স্মৃতিকে যেন গেঁথে থাকে এই বিদায় মুহূর্ত।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

মাদারীপুরে সরকারি চাকরি থেকে কোটা বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ

কাজল খান – মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:: সরকারি চাকরি থেকে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ...