নিজস্ব প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানাস্থ পূর্ব মাধবপুরে গ্রামবাসীকে ফাঁসাতে নিচের প্রতিবন্ধী ছেলেকে হত্যা মামলা পুনঃ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১৯ মার্চ,২০২৪ইং তারিখে আগের চার্জশীট গ্রহণ না করে, সিআইডিকে পুনঃ তদন্ত করার নিদের্শ দিয়েছে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজেষ্ট্রেষ্ট, হবিগঞ্জ। অন্যদিকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী মারুফা খাতুন। কে বা কারা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক বর্তমান দেশবাংলা প্রতিনিধিকে জানান, (১) কাসেম, পিতা: মিরা, ইরা মিয়া, (২) রবিসা, পিতা : মুতি মিয়া, (৩) কুকন মিয়া, পিতা: অলি মিয়া, (৪) আবেদ মিয়া, পিতা: কালা মিয়া, (৫) এনু মিয়া, পিতা: মৃত ধুদু মিয়া, (৬) আচন মিয়া, পিতা: মৃত জনু মিয়া, (৭) রাজ মিয়া, পিতা: মৃত. দনু মিয়া, (৮) সুমন মিয়া, পিতা নূর মিয়া, (৯) মাসুক, পিতা: আব্দুল গনিয়া, (১০) চুটু মিয়া, পিতা: মৃত আতিক আলী, (১১) রুকমান, পিতা: নুর মিয়া, (১২) আজি রহমান, পিতা: চায়েবালী, (১৩) মিজান, পিতা: অজ্ঞাত, (১৪) তাহিন মিয়া, পিতা: মৃত. আফিল উদ্দীন, (১৫) জামাল মিয়া, পিতা: মৃত. আকিল উদ্দীন, (১৬) মামুন, পিতা: মৃত. আকিল উদ্দীন, (১৭) জিয়া, পিতা: মনজুর আলী, সাদ্দাম, পিতা: আনর মিয়া।
ঘটনাসূত্র: গ্রামবাসীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ফাঁসাতে নিজের অন্যান্য সন্তানদের সাথে নিয়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পিতা। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার পূর্ব মাধবপুরে। এ বিষয়ে বাদী হয়ে হবিগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ আমলী আদালত ০৬ এ ১। গনি মিয়া পাঠান, পিতা: মৃত. রইছ উদ্দিন, ২। ছুরুক পাঠান, ৩। আফজাল পাঠান, ৪। উজ্জ্বল পাঠান, ৫। এমরান পাঠান, ৬। হৃদয় পাঠান, ৭। বাদল পাঠান, ৮। কাজল পাঠান, (২ থেকে ৮নং এর সর্ব পিতা: গণি মিয়া পাঠান) ৯। জাহের পাঠান, পিতা- মৃত. আছম উদ্দিন, ১০। রাসেল পাঠান, পিতা- জাহের উদ্দিন, ১১। সাহেব পাঠান, ১২। মান্না পাঠান (১১ ও ১২নং ্এর পিতা: ছুরুক পাঠান) ১৩। শেফালী পাঠান, স্বামী- উজ্জ্বল পাঠান, ১৪। নাছিমা খাতুন, স্বামী- আফজল পাঠান, সর্ব সাং- পূর্ব মাধবপুর, থানা, মাধবপুর, জেলা হবিগঞ্জ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহত রাষ্টু মিয়া পাঠানের স্ত্রী মারুফা খাতুন, যার মামলা নং-২৬২। মামলা সূত্রে জানা যায়, ১নং আসামী গনি মিয়া পাঠানসহ তার পরিবার পরিজনের অন্যান্য আসামীরা অত্যন্ত উগ্র ও উশৃঙ্খল প্রকৃতির। তাদের বিরুদ্ধে খুুনের মামলাসহ অনেক মামলা মোকদ্দমা বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ৪নং আসামী উজ্জ্বল পাঠান এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা চলমান। তারা এতই উশৃঙ্খল যে যখন তখন বিনা কারণে বিনা উস্কানিতে সাধারণ নিরীহ লোকজনকে অশ্লীল গালাগালাজসহ মারধর করতো। আসামীদের বাড়ীর কাছে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস রোড। এ রোড দিয়েই চলাচল করতো পূর্ব মাধবপুর গ্রামসহ সমগ্র গ্রমের লোকজন। আসামীরা প্রায়ই এই রোডে চলাচলরত নিরীহ গ্রামবাসীদের বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতন করতো। রাষ্টু মিয়া হত্যাকান্ডের ৬মাস পূর্বে এলাকার লোকজন আসামীদের বিরুদ্ধে পূর্ব মাধবপুর গ্রামে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের অত্যাচার নির্যাতনের বিষয়ে একটি মিটিং করেন। উক্ত মিটিং-এ মাধবপুর থানা পুলিশ আসামীদেরকে হুশিয়ারি ও সর্তক করে চলে গেলে তারা আরো ক্ষিপ্ত ও উশৃংখল হয়ে বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি করে যে, সাধারণ মানুষ আইন-আদালতের আশ্রয় নিতেও ভয় পেতে শুরু করে।
অত্যাচার নির্যাতনের এক পর্যায়ে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে রাষ্টু মিয়া হত্যাকান্ডের সপ্তাহখানেক পূর্বে তাদের বিরুদ্ধে পূর্ব মাধবপুর গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে মাইকিং করে পূর্ব মাধবপুর, দক্ষিণ বাড়া চান্দুরা, মুরাদপুর, হরিশ্যামা, সুন্দ্রাদিল ভাটিবাড়ি, পুটানিয়া, বলরামপুর, দিঘীরপাড়-গ্রামসমূহের লোকজন এবং জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার মুরুব্বীয়ানদের উপস্থিতিতে ঘটনার তারিখে অর্থাৎ বিগত ১৪/১০/২০২০ইং তারিখে বিকেলে পূর্ব মাধবপুর সাকিনের হযরত আবু বক্কর (রঃ) জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে খোলা জায়গায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিং-এ সর্বসম্মতিক্রমে আসামীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সহায়তায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আমার শ^শুর বাড়ির লোকজন তথা আসামীগণ মিটিং-এর খবর পাইয়া পূর্ব মাধবপুরের লোকজনের প্রতি আরো মারাত্মক আক্রোশান্বিত হয়ে ঐদিনই সন্ধ্যার পরপর নিজেদের কাউকে খুন করে মিটিংয়ে নেতৃত্বদানকারী সাধারণ লোকজনদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য এক গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১নং আসামী গণি মিয়া পাঠান ও ৪নং আসামী উজ্জ্বল পাঠানের নেতৃত্বে সকল আসামীরা বাড়ীর মধ্যের রুমে (যেখানে নিহত রাষ্টু মিয়া থাকতো) ঢুকে। ঢুকার পরপরই ১নং আসামী গণি মিয়া পাঠানের হুকুমে সবাই দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। এ সময় হত্যার শিকার রাষ্টু মিয়ার স্ত্রী মারুফা খাতুন বাধা দিলে তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং একটি ঘরে আটকিয়ে রাখে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লোক দেখানোর জন্য মৃত রাষ্টু মিয়াকে ধরাধরি করে সিএনজিতে উঠিয়ে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
পরিকল্পনার পরবর্তী অংশ হিসেবে রাষ্টু মিয়ার সুরতহাল ও ময়না তদন্ত সম্পন্ন করার পর ৪নং আসামী উজ্জ্বল মিয়া পাঠান বাদী হয়ে ১৬/১০/২০২০ইং তারিখে এলাকার ৪৬জন নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে আসামী শ্রেণীভূক্ত এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০০জন উল্লেখ করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার, জি.আর. মামলা নং- ৩১১/২০২০ইং (মাধবঃ)। আসামীরা দীর্ঘদিন যাবৎ কখনো প্রলোভন দেখিয়ে আবার কখনো প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে রাষ্টু মিয়ার স্ত্রী মারুফা খাতুনকে তাদের বাড়ীতে আটকিয়ে রাখে। একটা দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর আসামীরা যখন মারুফা খাতুনের উপর নজরদারি কমিয়ে দেয় তখন মারুফা খাতুন কৌশলে তার পিতার বাড়িতে গিয়ে সবাইকে সকল ঘটনা খুলে বলে। স্বামীর প্রকৃত খুনিদের বিচারের দাবীতে ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলা করেন মারুফা খাতুন। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রতিবদ্ধী স্বামীর হত্যার বিচার দাবী করেছেন নিহতের স্ত্রী মারুফা খাতুন। মামলার অগ্রগতি ও বিস্তারিত তথ্য অনুসন্ধানে শেষে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখতে চোঁখ রাখুন দৈনিক বর্তমান দেশবাংলা পত্রিকায়।