সর্বশেষ সংবাদ
Home / ধর্ম / প্রিয়নবী সা. বাবা হিসেবে যেমন ছিলেন

প্রিয়নবী সা. বাবা হিসেবে যেমন ছিলেন

একজন মুমিনের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুসরণীয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য করো, আশা করা যায়, তোমাদের প্রতি করুণা করা হবে।’ (সূরা আন নূর, আয়াত, ৫৬)

আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘হে নবী! লোকদের বলে দাও, যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।’ তাদেরকে বলো, ‘আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ৩১)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে নিজ হাতে ইসলামের বিধি-বিধান শিখিয়েছেন। ‍বিধি-নিষেধ ছাড়াও ব্যক্তি জীবনের সম্পর্ক, সম্পর্কের খুঁটিনাটিও শিখিয়েছেন তিনি। বাবা হিসেবে সন্তানের সঙ্গে একজন মানুষের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত তাও শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

হাদিসের গ্রন্থ থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাবা হিসেবে প্রতিদিন দুইবার করে মেয়ে ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে দেখতে যেতেন। কোনো সফরে বের হলে রওয়ানার আগে ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহার সঙ্গে দেখা করে যেতেন এবং ফিরে এসেও তার সঙ্গে দেখা করতেন।

ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর ঘরে আসতেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দরজা থেকে তাকে এগিয়ে নিয়ে আসতেন, বুকে জড়িয়ে নিতেন, হাতে, কপালে চুমু খেতেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একবার যুদ্ধের গণীমত হিসেবে অনেকগুলো গোলাম আসে। এতো গোলাম দেখে আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে গিয়ে বললেন, তোমার তো কাজ করতে অনেক কষ্ট হয়, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ গিয়ে একটি গোলাম নিয়ে এসো, এতে করে তোমার কাজ করতে সহজ হবে।

ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে দেখলেন তিনি অন্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। পরদিন তিনি আবার গেলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলন, ফাতেমা তোমার কী প্রয়োজন?

ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা কিছু না বলে চুপ করে রইলেন। তা দেখে আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, চাক্কি ঘুরাতে ঘুরাতে ফাতেমার হাতে ফোসকা পড়ে গেছে। কূপ থেকে পানি উঠাতে উঠাতে বুক ব্যথা হয়ে গেছে। ঘরদোর ঝাড়ু দিতে দিতে কাপড়-চোপর ময়লা হয়ে যায়। তাই আপনার কাছে একজন গোলাম চাইতে বলেছিলাম!

তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে তিনটি কথা বললেন-

১. আল্লাহকে ভয় করো।
২. আল্লাহর ইবাদত করো।
৩. নিজের ঘরের কাজ নিজেই করো।

আর যখন বিছানায় যাবে তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়বে। এই তাসবীহগুলো তোমার জন্য খাদেম উপেক্ষা উত্তম হবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস, ২৯৮৮)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম শুধু সন্তানকে ভালোবাসতেন না, সন্তানের কল্যাণকামীও ছিলেন, তাদের আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধও করতেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

জু’মআর নামাযঃ  ফযিলত ও গুরুত্ব

মাওলানা সাইফুল ইসলামশি,ক্ষক: মাদরাসাতুল হিকমাহ,ঢাকা: ২৪ ফিট, রসূলবাগ, কদমতলী, ঢাকা   একজন ব্যক্তি ঈমান আনার ...