সর্বশেষ সংবাদ
Home / আন্তর্জাতিক / ফ্রান্সে অনুমোদন পেল নতুন অবসর আইন

ফ্রান্সে অনুমোদন পেল নতুন অবসর আইন

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবিত নতুন অবসর আইনটির অবশেষে কার্যকর হওয়ার পথ খুলছে। বিতর্কিত এই আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলা সত্ত্বেও শুক্রবার সেটির অনুমোদন দিয়েছে ফ্রান্সের সাংবিধানিক পরিষদ।

এখন কেবল প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষা। আইনের মূল কপিতে ম্যাক্রোঁ স্বাক্ষর করলেই তা কাযকরী আইন হয়ে উঠবে ফ্রান্সে।

ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে এত দিন পর্যন্ত ফ্রান্সেই অবসরের বয়স সব থেকে কম ছিল। করোনা মহামারির পর পৃথিবী জুড়ে মন্দার প্রভাব পড়েছে ফ্রান্সেও। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে সরকারের খরচ কমানো যায়—পর্যালোচনা করতে গিয়ে ম্যাক্রোঁ জানান, সরকারি ব্যয়ের একটা বিশাল অংশজুড়ে থাকে নাগরিকদের অবসর ভাতা।

গত ৩০ জানুয়ারি ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় আইনসভায় প্রস্তাবিত পেনশন বিলটি পেশ করেন ম্যাক্রোঁ। নতুন সেই বিলটিতে অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার প্রস্তাব করা হয়।সেই সঙ্গে বলা হয়—যেসব ফরাসি নাগরিক পূর্ণ অবসর ভাতা পেতে চান, তাদের অন্তত ৪৩ বছর চাকরি করতে হবে।

বর্তমান আইনে কোনো নাগরিক সাড়ে ৪১ বছর কাজ করলেই পূর্ণ অবসরভাতা পান। নতুন আইন যদি কার্যকর হয়, সেক্ষেত্রে ৪৩ বছরের চেয়ে কম সময় কাজ করা নাগরিক অবসর গ্রহণ করলে তাদের অবসরভাতা থেকে কিছু তহবিল কেটে নেবে সরকার।

ফ্রান্সে জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী এবং সরকার পার্লামেন্টে ভোটকে পাশ কাটিয়ে এই বিল পাসের যে সিদ্ধান্ত নেয় সেটিরও বিপক্ষে বেশিরভাগ মানুষ।

কিন্তু এই বিরোধিতার মুখেও ফ্রান্সের সাংবিধানিক পরিষদ বলেছে, সরকার যে পরিকল্পনা করেছে সেটি সংবিধানসম্মত এবং এর ভিত্তিতেই পরিষদ অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।

ফ্রান্সের বিরোধী নেত্রী ম্যারিন লে পেন ও তার সমর্থকরা এর আগে পার্লামেন্টে এই আইনটি পাস হবে কিনা- তা গণভোটের ভিত্তিতে নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শুক্রবার সেই প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে সাংবিধানিক পরিষদ।

নতুন এই বিলটি বাতিলের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চলছে রাজধানী প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে। বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইতোমধ্যে ১১২ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এতে ফ্রান্সে সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান এবং কখনও কখনও সহিংস রূপ নেওয়া বিক্ষোভের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও তার সরকার বড় ধরনের স্বস্তি পেল।

শুক্রবার সাংবিধানিক পরিষদ আইনটি অনুমোদন দেওয়ার পর রাজধানী প্যারিসের সিটি হল চত্ত্বরে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন সরকারবিরোধীরা। এসময় ‘আমাদের আন্দোলন চলবে’, ‘ম্যাক্রোঁকে থামাও’, ‘আইন বাতিল না করলে বাড়ি ফিরব না’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

ফ্রান্সের বিরোধী দলীয় নেত্রী ম্যারিন লে পেন শুক্রবার নিজ দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের আন্দোলনের রাজনৈতিক ভবিষ্যত এখনও শেষ হয়ে যায়নি।’

গত সপ্তাহে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, যদি অবসর গ্রহণের বয়স সংস্কার না করা হয়—সেক্ষেত্রে বিপুল অর্থনৈতিক চাপের কারণে কয়েক বছর পর পেনশন প্রকল্প বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে সরকার।

তবে শুক্রবার আইনটি অনুমদোনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ সম্পর্কে ম্যাক্রোঁর  নতুন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

লেবাননে ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলা, নিহত ৩৩

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লেবাননের বৈরুতে শুক্রবার ব্যাপক হামলা চালিয়ে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র ...