মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: -৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান এবং অসপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার। স্বাধীনতার স্বপ্নসাধ বাস্তবায়নে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখুন। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
গতকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গজারিয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বীর প্রতীক, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা সায়েব আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আতাউর রহমান নেকি খোকন, খাদিজা আক্তার আঁখি, ইউনিয়ন পরিষদ আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন, মিজানুর রহমান প্রধান, ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মোঃ লিটন, মনিরুল হক মিঠু, শহীদুজ্জামান জুয়েল, কামরুল হাসান ফরায়েজী, হাফিজুজ্জামান খান জিতু প্রমুখ। এদিন তিনি মুন্সিগঞ্জ ও গজারিয়া জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে তিনি প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তারপর জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি বত্রিশস্থ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ আর্ন্তজাতিক একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস। এই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয়-দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপোসহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। কালজয়ী এই ভাষণের পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ শুরু হয়। স্বাধীনতা অর্জনের চ‚ড়ান্ত লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। ১৯৭১-র ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের ধারাবাহিক সংগ্রামে জীবনের চৌদ্দটি বছর জেলে কাটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কয়েকবার ফাঁসির কাষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারাবরণ করার পরও স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নে আপোস করেননি। তিনি বাংলার মানুষকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন ভূখন্ড একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, জাতীয় সংগীত, সংবিধান, বিশ্বের বুকে গর্বিত পরিচয় দিয়েছেন।