পরিপাকতন্ত্রের রোগ নির্ণয়ের একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি ‘ক্যাপসুল এন্ডোসকপি’। এই পদ্ধতিতে একটি ভিটামিন সাইজ ক্যাপসুল সেবনের মাধ্যমে রোগীর পরিপাকতন্ত্রের (মুখ থেকে পায়ুপথ) চলমান ও স্থির ছবি সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। ভিটামিন ক্যাপসুল সাইজের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্যাপসুলের মধ্যে রয়েছে একাধিক ক্যামেরা, লাইট, ব্যাটারি এবং তথ্য সংরক্ষণকারী ডিভাইস। পরিপাকতন্ত্রের রোগ নির্ণয়ের গতানুগতিক পদ্ধতির (এন্ডোসকপি ও কোলনসকপি) মাধ্যমে ছয় ইঞ্চির মতো জায়গার উপসর্গের কারণ নির্ণয় করা যায় না, কিন্তু ক্যাপসুল এন্ডোসকপি পরিপাকতন্ত্রের সব রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকারি হাসপাতালে দেশে প্রথম বারের মতো ক্যাপসুল এন্ডোসকপি ইউনিট আজ মঙ্গলবার মহাখালী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চালু হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আজাদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক, বিএমডিসির সভাপতি প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান। ক্যাপসুল এন্ডোসকপি রোগীকে খাওয়ানোর পর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পেটে থাকে। তারপর পায়ুপথে তা বের হয়ে যায়। এই ১২ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক হাজার ছবি তুলতে পারে ক্যাপসুলটি, যা কম্পিউটারে দেখতে পারেন চিকিৎসকেরা। ক্যাপসুল এন্ডোসকপির মূল্য ৪৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে রোগীর পেছনে ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, ভেজাল খাদ্যের কারণে দেশে ব্যাপক হারে বাড়ছে পরিপাকতন্ত্র, প্যানক্রিয়াস ও লিভারের রোগী। এছাড়া করোনা-পরবর্তী সময়ে এসব রোগী যেন বেশি হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে আগতদের ৪০ শতাংশই এই রোগে আক্রান্ত। জলবায়ু ও পরিবেশগত বিভিন্ন কারণে বর্তমানে গ্যাস্ট্রো ইন্টেসটাইনালজনিত রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। দেশে এ ধরনের রোগী সবচেয়ে বেশি। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় এনে পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াসজনিত গ্যাস্ট্রো ইন্টেসটিইনাল রোগে আক্রান্ত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর মহাখালীতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
জাতীয় অধ্যাপক, বিএমডিসির সভাপতি প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান বলেন, গরিব ও দরিদ্র রোগীরা শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিনা মূল্যে বিশ্বমানের সুচিকিত্সা সেবা পাচ্ছেন, যা আগে মধ্যবৃত্তরাও আশা করতে পারত না। ক্যাপসুল এন্ডোসকপি চালু হওয়ার মাধ্যমে দেশের জনগণ বিশ্বমানের আরেকটি চিকিৎসা পেতে যাচ্ছে।