সর্বশেষ সংবাদ
Home / অর্থনীতি ও বানিজ্য / কুরবানির জন্য প্রস্তুত ৪ লাখ ৩৩ হাজার পশু

কুরবানির জন্য প্রস্তুত ৪ লাখ ৩৩ হাজার পশু

পবিত্র ঈদুল আযহা ও কুরবানি ইসলামের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ও আত্মত্যাগের অনন্য ইবাদত। আত্মত্যাগ ও মানবতার বার্তা নিয়ে প্রতিবছরই মুসলিম উম্মাহর সামনে হাজির হয় এই উৎসব। পবিত্র ঈদ উল আযহায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো কুরবানির পশু। ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এসব পশুর মধ্যে রয়েছে- ষাঁড়, বলদ, গাভী (বাচ্চা উৎপাদনে অক্ষম) মহিষ ও ছাগল।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে নওগাঁ জেলায় এবার ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩টি গবাদিপশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্যে নওগাঁ সদরে ৪২ হাজার ৪২০টি, রাণীনগরে ৪১ হাজার ৭৪১টি, আত্রাইয়ে ২৪ হাজার ৭৮৩টি, ধামইরহাটে ৪৪ হাজার ৮২৫টি, বদলগাছীতে ৩২ হাজার ৩৭৯টি, নিয়ামতপুরে ৩২ হাজার ৯৬টি, পোরশায় ৩৩ হাজার ৪৩৬টি, সাপাহারে ২৮ হাজার ৭৬৬টি, মহাদেবপুরে ৪২ হাজার ৫৮৯টি, পত্নীতলায় ৪৬ হাজার ৮১০টি এবং মান্দায় ৬৩ হাজার ২২৮টি গবাদি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

জেলার বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে জানা যায়, ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ভালো দামের আশায় খামারিরা পশু লালন-পালন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খরচ বেশি হলেও ভালো দাম পাওয়া নিয়ে আশা করছেন খামারিরা। অন্যদিকে ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ যেন না করতে পারে তারও দাবি জানিয়েছেন তারা।

নওগাঁ সদর উপজেলার মৃধাপাড়া এলাকার সজিব এ্যাগ্রোর মালিক মো.সজিব হোসেন বলেন, আমার খামারে ৯০টি ষাড় গরু রয়েছে। গরুগুলোকে লালন-পালন ও পরিচর্যা করে ক্রেতার মনের মত করে তুলছি। আগামী সপ্তাহ থেকে গরুগুলোকে বাজারে বিক্রি করা শুরু করব। গত ১০মাস আগে গরুগুলোকে কিনেছি মোটা-তাজা করে ঈদ বিক্রি করার জন্য। প্রতিটি গরু ৭০-৮০হাজার টাকায় কিনেছি। প্রতিদিন প্রতিটি গুরুর জন্য খাবার বাবদ খরচ হয় ৩০০ টাকার মতো। যদি এই দামে বিক্রি করতে পারি তবে সব খরচ বাদ দিয়ে গরু প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো লাভ হবে।

রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের খামারি রফিকুল আলম বলেন, আমার খামারে ১০টি গরু ও ৫ছাগল আছে। ১বছর আগে এসব গরু ও ছাগল কিনেছিলাম। গরুগুলো ৫০-৬০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। আর ছাগলগুলো ৭-৮ হাজার টাকা উন্নত জাতের প্রতিটি ছাগল কিনেছিলাম। ভালো দাম পাবার আশায় পরিচর্চা করে যাচ্ছি। গো-খাদ্যের দাম কিছুটা বেশি । ভারতীয় পশু দেশে না ঢুকতে দিলে, ভালো দাম পাবো বলে আশা করছি। ভারতীয় পশু যেন দেশে না ঢুকতে পারে সেজন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারির দাবি করছি।

মান্দা উপজেলার মৈনম গ্রামের খামারি সিদ্দিক হোসেন বলেন, ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ৫টি গরু প্রস্তুত আছে। ভারতীয় পশু যেন দেশে না ঢুকতে পারে সেদিকে প্রশাসন যেন নজর দেই। তাহলে আমরা ভালো দাম পাবো বলে মনে করছি। নইলে লোকসান হয়ে যাবে আমাদের। কারণ ভারতের পশু দেশে আসলে দাম কমে যাবে গরুগুলোর। তখন আমাদের লোকসান হতে পারে।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দীন বলেন, ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে শুধু গরুই ৬৭ হাজার। জেলায় প্রায় ২৫হাজারের মতো খামার রয়েছে। গত বছর ২ লক্ষ ২৫ হাজার কুরবানি হয়েছিল। এবারে জেলায় প্রায় ৩ লাখের বেশি কুরবানি হবে বলে ধারণা করছি। জেলায় কুরবানির জন্য পশুর সংকট হবে না। চাহিদার তুলনায় জেলার খামারগুলোতে পশু বেশি থাকায় এবার অন্য কোথাও থেকে পশু আনার প্রয়োজন নেই।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জেলার খামারিরা কুরবানির পশু বিক্রির জন্য ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পশুগুলোকে মোটাতাজা করার জন্য কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বা ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে না। সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। মাঠের সবুজ ঘাস, ভুসি, খৈল, চালের গুড়া, ছোলা খাওয়াচ্ছেন। আর পশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ রাখতে আমরা খামারিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় ভারতীয় পশু দেশে অবৈধভাবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ে আসে। ফলে প্রকৃত খামারিরা সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। কারণ ভারতীয় গরু আসায় দাম অনেক কমে যায়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি এসব ব্যাপারে নজরদারি করছেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে কারখানা বন্ধের অপচেষ্টা: শিল্প উপদেষ্টা

  স্টাফ রিপোর্টার: দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে কারখানা বন্ধ রাখার অপচেষ্টা হচ্ছে ...