সর্বশেষ সংবাদ
Home / ধর্ম / দৃষ্টি শক্তিহীন কোরআনের হাফেজদের মাঝে দিয়ামনি মাল্টিমিডিয়ার কোরআন শরীফ ও জায়নামাজ বিতরণ

দৃষ্টি শক্তিহীন কোরআনের হাফেজদের মাঝে দিয়ামনি মাল্টিমিডিয়ার কোরআন শরীফ ও জায়নামাজ বিতরণ

জাহাঙ্গীর আলম:- দিয়ামনি মাল্টিমিডিয়ার উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে কামরাঙিরচর তালিমুল কোরআন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ে দৃষ্টি শক্তিহীন ১৩ জন কোরআনের হাফেজদের মাঝে কোরআন শরীফ ,জায়নামাজ বিতরণ,ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

দৃষ্টি শক্তিহীন এসব হাফেজদের দুনিয়ার একটি রং কালো। কালোর সেই অন্ধকার পেছনে ফেলে পবিত্র কোরআনের আলোয় আলোকিত হয়েছেন ১৩ জন হাফেজ। তাদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে কামরাঙ্গীরচরের তালিমুল কোরআন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নূরানি হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা।

যেখানে চোখে দেখেও তেলাওয়াত করতে পারে না মানুষ, সেখানে একদল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহার করে আঙুলের সাহায্যে শিখেছেন কোরআন তিলাওয়াত।একজন বলেন, আমি জন্মসূত্রে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে আমি হাতের ইশারায় কোরআন ব্রেইল পড়ছি।

আরেকজন বলেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে কোরআন শরীফ পড়ার ও হেফজ করার তৌফিক দান করেছেন। সে জন্য অনেক আনন্দিত। আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক শুকরিয়া।কামরাঙ্গীরচরের এই প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক। তিনি নিজেও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এমনকি মাদরাসার সভাপতিও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।

শিক্ষক বলেন, আমরা যে পড়তে পারি, এটা আল্লাহ তায়ালার বড় একটা নেয়ামত। আজকে যদি আল্লাহ জবান না দিত, পড়তে না পারতাম; তাহলে এই নেয়ামতটা আমরা পেতাম না। সে জন্য আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া।

তালিমুল কোরআন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নূরানি হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা সভাপতি মীর আশরাফ হোসেন বলেন, ব্রেইল হচ্ছে দৃষ্টিহীনদের একটি বিশেষ পদ্ধতি। ফ্রান্সের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী লুই ব্রেইল এটার আবিষ্কারক। ছয়টি ফোটার মাধ্যমে সবগুলো অক্ষর সৃষ্টি হয়। একেকটি অক্ষরের জন্য সুনির্দিষ্ট নম্বর আছে, সেগুলো আমরা মুখস্ত করে নেই। এভাবেই আমরা পড়াশোনা করি।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে কোরআনের শিক্ষা সহজ না হলেও একাগ্রতার কারণে সম্ভব হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন তাদের শিক্ষক।শিক্ষক বলেন, প্রথমে তাদের নম্বর শেখানো হয়, ডট শেখানো হয়। এরপর সিরিয়াল শেখান হয়। এরপর তাকে ডান-বাম চেনানো হয়। এরপর সে কোরআন শরীফ পড়তে পারে।

কোরআনের এ হাফেজদের সহযোগিতায় সবার এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

একজন বলেন, তাদের সমস্ত শরীরে একটি বশয় অনুপস্থিত সেটা হচ্ছে দৃষ্টিশক্তি নেই। শিক্ষার্থী হিসেবে এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে, পাশাপাশি ওস্তাদরা অনেক পরিশ্রম করেছে। এই প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করার জন্য এবং আরও অনেক দূর এগিয়ে নেওয়ার জন্য এখানে অনেক আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। মাদরাসাটাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা এবং তাদের এই কার্যক্রমকে সচল রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।২০১৬ সাল থেকে মাদরাসাটিতে এই পদ্ধতিতে কোরআন শিখে আসছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান অপূর্ব’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য মোঃ মাজহারুল ইসলাম,মোঃ শাহীন ,মোঃ বেলায়েত হোসেন,মোঃ ইমাম হোসেন ইমন,জহিরুল আলম পিলু,আতিকুল ইসলাম চৌধুরী জিন্নাহ সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মোঃ নীরবের উপস্হিতিতে মাদ্রাসার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হাতে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

পলাতক বায়তুল মোকাররমের খতিবেন সন্ধান মিলেছে গোপালগঞ্জে

  স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী সরকারের পতনের পর পলাতক রয়েছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল ...