লিয়াকত হোসেন, রাজশাহী থেকে : চারঘাটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া সেই এসআই কে শাস্তি মুলক বদলি। রাজশাহীর চারঘাট থানায় ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী বলে গ্রেপ্তার করে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়ে মামলা দেয়ার অভিযোগে সেই এসআই করিম কে শাস্তি মূলক বদলি করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে তাকে রাজশাহী চারঘাট থানা থেকে শাস্তি মূলক টুরিস্ট পুলিশে বদলি করা হয়। এর আগেও একটি অভিযোগ ও মাদক দিয়ে মামলা দেয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মের অপরাধে তাকে বদলি করা হয়েছে।
অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, চারঘাট থানা পুলিশের এসআই করিমের বিরুদ্ধে উপজেলার বালাদিয়াড় গ্রামে ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী বলে কুবাত আলী (৪৫) নামের এক মুরগির খামার ব্যবসায়ীকে থানায় আটকে রেখে ব্যপক মারপিট করে ও মাদক দিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠে।
গত রোববার রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশেরর ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগির মেয়ে নার্গিস খাতুন বাদি হয়ে একটি অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার শাস্তি মুলক চারঘাট থানা থেকে এসআই করিম কে টুরিস্ট পুলিশে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধীক অপোকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে চারঘাট থানার এসআই আব্দুল করিম ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে থানা এলাকার বালাদিয়াড় গ্রামের কোবাদ আলীর বাড়ির দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে এবং দরজা খূলে দিতে বলেন। দরজা খুলে দিতে দেরী হওয়ায় কোবাদ আলীর অন্তঃসত্তা মেয়ে নারজিনা বেগমকে চড়থাপ্পড় মারে। পাশাপাশি ঘরে মাদক আছে বলে তল্লাসী শুরু করেন তারা।
নারজিনা এসআই করিমকে কেন ঘর তল্লাসী করছেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এতে নারজিনা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে এবং পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, ঘর তল্লাসীর নামে এসআই আব্দুল করিম ওয়ারড্রফের তালা খুলে টিএমএস এনজিও থেকে উত্তোলনকৃত ৭০ হাজার টাকা বের করে নেন। পাশাপাশি কোবাদের নামে ওয়ারেন্ট আছে বলে তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। কোবাদ আলীর বড়ভাই কাচোন আলী ওয়ারেন্টের কাগজ দেখতে চাইলে তাকেও আটকের হুমকি দেয় এসআই আব্দুল করিম।
এ ব্যাপারে চারঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলামের কাছে কোবাদের মেয়ে নার্গিস খাতুন তার বাবাকে আটকের বিষয়ে জানতে চান। এতে ওসি ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজসহ নার্গিস খাতুনকে বের করে দেয়। এরপর নার্গিস খাতুন এএসপি নুরে আলমের কাছে যান এবং বিষয়টি খুলে বলেন। এএসপি নুরে আলম তখন মুঠোফোনে ওসি নজরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করলে ওসি জানান কোবাদ আলীর কাছে থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। একবার ওয়ারেন্ট আছে আবার মাদক মামলার আসামী সাজাচ্ছে। এমন অসৎ পুলিশের বিরুদ্ধে সুষ্ঠুভাবে বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করা হয়েছে।