সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / হোমনায় যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে শ্বসরোধে হত্যা ॥ আটক-১

হোমনায় যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে শ্বসরোধে হত্যা ॥ আটক-১

নাজমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেধে পিটিয়ে ও শ^াসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামীসহ শ^শুরবাড়ীর লোকজন। ঘটনাটি ঘটে ২৮ মে রাতে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মো. হোসেন মোল্লার বাড়ীতে। খবর পেয়ে পুলিশ ২৯ মে বুধবার সকালে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনা নিহতের বাবা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে হোমনা থানায় মামলা নং ১২ তারিখ ২৯মে/১৯ইং দায়ের করলে পুলিশ ১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬বছর পূর্বে তিতাস উপজেলার কড়িকান্দি গ্রামের হাজ¦ী আব্দুস সালামের ছোট মেয়ে নাজমা আক্তারকে হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হোসেন মোল্লার ছেলে কথিত ডাক্তার মো. মাঈন উদ্দিনের সাথে মুসলিম শরিয়া মোতাবেক বিবাহ হয়। সেসময় তাকে নগদ যৌতুকবাবদ প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দেয়া হয়। ৬ বছরের সংসারে মাহিনুর আক্তার (৪) ও নোমান হাসান (৮মাস) বয়সের দুটি সন্তান হয়। তবে দীর্ঘ ৬বছরে যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনের খড়গ থেকে কখনোই রেহাই পায়নি মা হারা এতিম নাজমা আক্তার। এরই মধ্যে মাইন উদ্দিন গোপনে পাশ^বর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বুধাইরকান্দি গ্রামের ছালমা আক্তার (২৯) নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে। সেখানেও তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়।

তবে ছালমা ও মাইন উদ্দিনের সংসার যৌতুকের জন্য ডিভোর্স হলেও ফের গত কয়েকমাস ধরে সেই দ্বিতীয়া স্ত্রী ছালমা ও মাইন উদ্দিনের অনৈতিক মেলামেশা গোপনে জমে উঠে এবং উভয়েই প্রকাশ্যে নাজমাকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করা শুরু করে। নাজমাকে ও তার পরিবারের কাছে মাইন উদ্দিন ১৬ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করাতেই গত ২৮ মে রাতে হাত-পা বেধে পিটিয়ে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে এবং মাইন উদ্দিন নিজেই নাজমার বাপের বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায় সে আত্মহত্যা করেছে। তবে পাষন্ড স্বামীর এ হেন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠে খোদ দুর্গাপুর গ্রামেই। নিষ্পাপ শিশু নোমানকে কোলে নিয়ে কান্নার রোল পড়ে যায় প্রতিবেশীদের মাঝে। সকলের দাবি মাইন উদ্দিনসহ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নিহত নাজমার বাবা ও মামলার বাদি হাজ¦ী আব্দুস সালাম বলেন, আমার মেয়েটি এতিম দেইখা জামাই যখন যা চাইছে তা ই দিছি। গত কয়েকমাস ধরে আমার কাছে ১৬ লাখ টাকা দাবি করতেছে। আমি টাকা না দেয়ায় আমার মেয়েটারে এভাবে খুন করবো আমি ভাবতে পারি নাই। আমি আমার মেয়ে হত্যার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বি বলেন, নিহত গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে ৬জনকে আসামী করে মামলা করেছে। গৃহবধূর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর সময় শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা ১জনকে গ্রেফতার করেছি। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ আজ : আলোচনায় সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ

  সদরুল আইন: অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ...