ডেস্ক রিপোর্ট: রমজানের আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে গরু, ছাগল, খাসি, ভেড়া ও মহিষের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিলেও রাজধানীর সব জায়গায় তার সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। সংস্থাটির আওতাধীন কিছু বাজারে নির্ধারিত দামে বিক্রি হলেও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কোন বাজারে এর সুফল মিলছে না। এমনকি দক্ষিণ সিটির সব বাজার থেকেও নির্ধারিত দামে মাংস কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। ফলে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় উভয় মাংসের দামের ২০ থেকে ৫০ টাকা বা কোন কোন ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি তফাত্ দেখা গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, ডিএসসিসি আওতাধীন কিছু বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে ডিএনসিসি এলাকায় একই মাংসের জন্য ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে ৪৮০-৫০০ টাকা এবং ৭৫০-৮০০ টাকা পর্যন্ত।
দক্ষিণ সিটির হাতিরপুল, সেগুনবাগিচা, নিউমার্কেট কুর্মিতলা কাঁচাবাজার, ফরাসগঞ্জ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মাংসের দোকানে ডিএসসিসির মাংসের দামের তালিকা ঝুলানো। গরুর মাংস কেজি প্রতি ৪৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। তবে মেরাদিয়া, ফকিরাপুল ও কাপ্তানবাজার এলাকার সব কাঁচাবাজারে মাংসের দোকানে তালিকা চোখে পড়েনি। নির্ধারিত দামেও বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মিরপুর, শ্যামলী, আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এলাকা প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। এসব এলাকার দোকানে নির্ধারিত দামের কোন তালিকা দেখা যায়নি।
হাতিরপুল এলাকার মাংস ব্যবসায়ী সুলতান আহম্মেদ বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করছি কিন্তু লোকশান গুণতে হচ্ছে। অনেকে দোকান বন্ধ রেখেছে। কারণ রমজানে বেশি দামে গরু কিনতে হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতারা এখন আগের মতো গরুর মাংস কিনতে চান না। দর কষাকষি করেই ফিরে যান। সবাই বলেন, দাম বেশি। বেশি দামে গরু কিনতে হয় বলে মাংসের দাম বেশি। ডিএসসিসি এলাকায় নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রির নির্দেশনা পেলেও ডিএনসিসি এলাকায় কোন নির্দেশনা পাননি তারা। বিষয়টি তারা টেলিভিশন, লোকমুখে শুনেছেন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখেছেন বলে জানান ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা বলছেন, রমজানে গরুর মাংসের কেজি ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। তবে বাজারে গিয়ে বাস্তবে তার দেখা পান না। বিক্রেতার সাথে দর কষাকষিতে না পেরে অনেকেই এখন গরুর মাংস কেনা এড়িয়ে চলছেন।
উত্তরের শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা কাওসার আলম বলেন, আমি থাকি উত্তর সিটিতে। তবে দক্ষিণ সিটির সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে গিয়ে গরুর মাংস কিনে নিয়ে আসছি। দেখলাম, আমাদের এলাকায় চেয়ে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কম।
ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতীয় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪২০ টাকা, মহিষের মাংস ৪২০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগলের মাংস ৬০০ টাকা নির্ধারণ করেন। বাজারে সংস্থাটির কর্মীরা গিয়ে তালিকা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এদিকে ডিএনসিসি মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোন বৈঠক না করলেও দক্ষিণ সিটির সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিয়েছেন। তবে মাঠ পর্যায়ে ওই এলাকার মাংস ব্যবসায়ীরা কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানান।