ফুলের মধ্যে সবার পছন্দ গোলাপ। তাইতো ভালোবাসা দিবসে চাহিদা বেড়েছে
ফুলের। আর এই ভালবাসা দিবসে সুবাস ছাড়াবে সিরাজগঞ্জের ফুল। তবে সারা বছর
জুড়েই থাকে ফুলের চাহিদা। শুধু বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়
চারগুন।
জেলার ফুল চাষিরা জানান, বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে বিশেষ কয়েকটা দিবস থাকায়
ফুল কেটে বাজারজাত করা এবং পরিচর্যায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছর
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসসহ তিনটি বিশেষ দিনকে টার্গেট করে ফুলের বাজার ধরতে এ
অঞ্চলের ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে চাষিরা বাগান থেকে ফুল তুলে বিক্রি
করছেন।
এদিকে ফুল চাষের মাধ্যমে চাষিরা তাদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি সৃষ্টি করেছে
অনেক লোকের কর্মসংস্থান। আর এই ফুল চাষে লাভ বেশি হওয়াতে প্রতি বছর ফুল
বাগানের সীমানা বাড়াতে ব্যস্ত প্রান্তিক ফুল চাষিরা। তবে তাদের মতে
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা আরো লাভবানসহ আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হবে।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার
রতনকান্দি ইউনিয়নরে একডালা গ্রামে দুই ভাই ফুল চাষি আমিনুল ইসলাম ও
শহিদুল ইসলাম দুই বছর আগে আড়াই বিঘা জমিতে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও গাঁধা
ফুলের চারা দিয়ে চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে ফুল চাষের মাধ্যমে তারা লাভবান
হচ্ছে বুঝতে পেরে এ বছর প্রায় ৮ বিঘা জমিতে দেশী-বিদেশী লাল গোলাপ, সাদা
গোলাপ, গাঁদা ও রজনীগন্ধা ফুলের ব্যাপক চাষ করছে।
এবিষয়ে ফুল চাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, এবছর খরচ বাদ দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ
টাকা লাভ হবে। সিরাজগঞ্জ-পাবনা ও বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ফুল ব্যবসায়ীরা
পরিবহণের মাধ্যমে ফুল বিক্রি করে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাগান থেকে ফুল
পাইকারী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ফুল চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, ফুলের মান ও ফলন ভাল হয়েছে। ৭ বিঘা জমিতে
বিভিন্ন ফুলের আবাদ করেছি। দামও চড়া পাচ্ছি। জেলায় এবার ভালবাসা দিবসে
আমাদের ফুলের কদর বেশি।
পাবনা থেকে আসা ফুল ব্যবসায়ী মহির উদ্দিন বলেন, আমার ৪ টি ফুলের দোকানের
জন্য প্রতি পিস ফুল ১৫ টাকা করে ক্রয় করছি। ১৫শ পিস ফুলের ২২ হাজার ৫শ
টাকার অর্ডার দিলাম। এই ফুল বাগান থেকে ৩ ধরে বছর ফুল সংগ্রহ করি।
রতনকান্দির দুই ভাইয়ের ফুলের মান খুব ভাল, চাহিদাও বেশী। তাই ভালবাসা
দিবসের জন্য ফুলের বায়না করে গেলাম। বিকালে গাড়িতে ফুল পাঠিয়ে দিবে।
সিরাজগঞ্জ এস এস রোডের ফুলের দোকানদার মুক্তা ঘোষ, রাজ কুমার শাহ জানান,
এবার ভালোবাসা দিবসে ফুলের চাহিদা অনেক বেশী। এক পিস গোলাপের মুল্য ৩০/৪০
টাকা। ফুলের দাম এবার অনেক বেশী। আবার সঠিক সময়ে ফুল চাষিরা ফুল দিতে
পারেনা। ফুল আমদানী অনেক কমে গেছে। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে ফুলের চাহিদা
অনেক বেশি। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ফুল চাষীরা সঠিক সময় ফুল দিতে পারবে কি
না তাই চিন্তায় আছি।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোস্তম আলী জানান, রতনকান্দিতে
দুই ভাই মিলে তাদের নিজ উদ্যোগে ফুল চাষ শুরু করেছে। তাদের দেখা দেখি
১/২জন চাষ শুরু করলে কৃষি বিভাগের নজরে আসে। আমরা ইতোমধ্যে বাগান
পরিদর্শনের মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকদের ফুল চাষে আগ্রহী করতে চেষ্টা করছি।
আশা করছি ফুল চাষ করে তারা স্বাবলম্বী হবে।