সর্বশেষ সংবাদ
Home / সারাদেশ / খুলনা বিভাগ / সাতক্ষীরায় সজিনার বাম্পর ফলন, চাষীরা সজিনা চাষে আগ্রহী

সাতক্ষীরায় সজিনার বাম্পর ফলন, চাষীরা সজিনা চাষে আগ্রহী

মোঃ তুহিন হোসেন সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ অঞ্চলে সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন খরচ ও পরিচর্যা কম বলেই চাষীরা সজিনা চাষে আগ্রহী। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত সজিনা এখন দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিদিন পাইকারী ব্যবসায়ীরা উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে সজিনা ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে সজিনা বিক্রয় হচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেতারা।

তবে কিছু দিন পরে তা কমে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় এসে দাঁড়াবে। স্বাদে ও গুণে ভরপুর এ সবজিটি সকলের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রাম পর্যায়ে সজিনার ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া জমির আইল, সড়কের ধার, অনাবাদি জমিতে সজিনার চাষ হয়। তবে বাণিজ্যিকভাবে সজিনার উৎপাদন করতে পারলে অন্যান্য যেকোন সবজি উৎপাদনের থেকে এটি লাভজনক হবে। ইংরেজীতে সজিনার নাম ‘ড্রামস্ট্রিক’ যার অর্থ ঢোলের লাঠি। সজিনার ইংরেজী নামটি অদ্ভুত হলেও এটি একটি অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী উদ্ভিদ। বাংলাদেশে এটি নিয়ে তেমন গবেষণা না হলেও বিশ্বের বহু দেশে এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। বিশেষ করে গাছ বৃদ্ধিকারক হরমোন, ঔষধ, কাগজ তৈরী ইত্যাদি বিষয়ে। বহু দিন হতেই আমাদের দেশে এটি সবজির পাশাপাশি ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

সজিনার ফুল ও পাতা শুধু শাক হিসেবেই নয়, পশু খাদ্য হিবেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। এর পাতা শারীরিক শক্তি ও আহারের রুচির উন্নতি হয়। এর মধ্যে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, নিকোটিনিক এসিড, প্রোটিন ও চর্বি জাতীয় পদার্থ, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। ভারতীয়রা এটির স্যুপ খেয়ে থাকে। এ সময়ে ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকেরই মুখে স্বাদ থাকে না। আর এ স্বাদকে ফিরিয়ে আনতে সজিনার জুড়ি নেই। সজনার ফুল সর্দি কাশিতে, যকৃতের কার্যকারীতায়, কৃমি প্রতিরোধে এবং শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সজিনার বীজ থেকে তেলও পাওয়া যায় যা বাতের ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে এবং ঘড়ি ঠিক করার জন্য যে বেল ওয়েল ব্যবহার হয় তা এর বীজ হতে পাওয়া যায়। ২০ হতে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সজিনা ভাল জন্মায় এবং যেসব এলাকায় ২৫০ হতে ১৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় সেখানে ভাল জন্মায়। বেলে দোঁআশ হতে দোঁআশ এবং পিএইচ ৫.০ হতে ৯.০ সম্পন্ন মাটি সহ্য করতে পারে। সজিনা চাষে সারের তেমন প্রয়োজন হয়না। তবে ইউরিয়া এবং জৈব সার প্রয়োগ করলে গাছ ভাল হয়।

সজিনা বৃক্ষটি বীজ ও ডাল এর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। তবে সাতক্ষীরা জেলায় ডাল পুঁতে অঙ্গজ বংশ বিস্তারের মাধ্যমে সজিনার চাষ হয়। খাদ্যের পুষ্টিগুণ অনুযায়ী সজিনাতে প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্যপোযোগী পুষ্টি উপাদান হচ্ছে জ্বলীয় অংশ ৮৩.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২১.০ মিলি গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬০ কিলোক্যালোরি, প্রোটিন ৩.২ গ্রাম, খনিজ ১.৯ গ্রাম, ভিটামিনএ ০.০৪ মিলি গ্রাম, ভিটামিন বি (১)০.০২ মিলি গ্রাম, আঁশ ৪.৮ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ১১.৪ গ্রাম, লোহা ৫.৩ মিলি গ্রাম, ক্যারোটিন ৭৫০ মাইক্রো গ্রাম, ভিটামিন ৪৫.০ মিলি গ্রাম। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানাগেছে, সজিনা একটি লাভজনক সবজি। রোগবালাই প্রায় নেই এবং উৎপাদন খরচ খুব কম। তাই কৃষকদের সজিনা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সজিনা উৎপাদনকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে সজিনা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে কৃষি কর্মকর্তারা নানামুখি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

বেনাপোল পুটখালী সীমান্তে র‌্যাবের অভিযানে ৩৯৭ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক ১ 

  আনোয়ার হোসেন নিজস্বপ্রতিনিধি,যশোরঃ যশোরের বেনাপোল পুটখালী সিমান্তে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাবের ...