ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি\
মাত্র আধা শতক জায়গাতে মাথাগোজার ঠাঁই ছিলো মোঃ জাফর আলীর। দখল করে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে মারধোর করে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। একের পর এক মামলা দিয়েও হয়রানী করা হচ্ছে তাদেরকে। এঘটনায় গ্রামের ভুলনের পাড়ার মোঃ জাফর আলীর পরিবার গত প্রায় একমাস ধরে গ্রাম ছাড়া। প্রাণে মারার হুমকী দেয়া হচ্ছে ফোনে। এই ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ জাফর আলীর আপন ভাই সুরুজ আলী আর আরেক ভাই প্রবাসী হামিদ মিয়ার স্ত্রী মিলি আক্তারের বিরুদ্ধে।
নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৪০ বছর ধরে আধা শতকের বেশী পরিমান পৈত্রিক জায়গায় বসবাস করছিলেন। ঘরটি জরাজীর্ন হয়ে পড়ায় গত বছরের জুন মাসে মেরামত শুরু করলে বাধা দেন মিলি আক্তার। জাফর আলীর পরিবার পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় গেলে গত ২১ ডিসেম্বর ভাসুর সুরুজ আলী ও মিলি আক্তার তাদের নির্মিত ঘরটি ভেঙ্গে ফেলে দেন। দখলে নিয়ে পাকা স্থাপনা করার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে বাড়িতে এলে মিলি ও সুরুজ আলীর ছেলেরা একত্রিত হয়ে হামলা চালিয়ে আহত করেন বৃদ্ধ জাফর আলী, তার ছেলে মনির মিয়া, মোশাররফ হোসেন, মনিরের স্ত্রী সীমা আক্তার, হেলেনা আক্তার ও ফারুক মিয়া। তারা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। অভিযোগ, হামলার পর থানায় গিয়ে উল্টো ২২ ডিসেম্বর মিলি আক্তার বাদী হয়ে মামলা দেয় তাদের বিরুদ্ধে। পরে ২৪ ডিসেম্বর মোঃ সুরুজ আলীকে প্রধান আসামী করে জাফর আলীর ছেলে মোবারক হোসেন থানায় হামলার অভিযোগে ৭জনকে আসামী করে মামলা দেন। মোবারক হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলাসহ ৪টি মামলা দেয় মিলি ও তার ছেলে। নারী নির্যাতন মামলার অভিযোগের তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন(পিবিআই) কোন সত্যতা পায়নি বলে প্রতিবেদন দেয়। আরেক ছেলে মনির হোসেন জানান, পুরো বাড়ি ৫৪ শতক। বাপ-চাচা ৮ জনের মালিকানা। বাড়ি ভাগবন্টন না হলেও তার চাচা সুরুজ আলী আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছেন বাড়িতে।
গত বছরের ৮ জুলাই মারা যান মনিরের মা আছিয়া খাতুন। সুরুজ আলীর বাধার কারনে মাকে পারিবারিক গোরস্থানেও সমাহিত করতে পারেননি বলে জানান মনির। সুরুজ আলীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন আরেক ভাই সোনালী ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মজিবুর রহমান। তিনি জানান, সুরুজ আলী ও তার ছেলেদের অত্যাচারে ১৯৯৫ সাল থেকে বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। পৈত্রিক জমি বিক্রি করে তিনি হজ্বে যেতে চাইলে সুরুজ আলী জমি বিক্রিতে বাধার সৃষ্টি করে। এছাড়া তাদের ৭ ভাইয়ের মালিকানাধীন ৪৯ শতক জায়গাও সুরুজ আলী দখল করে রেখেছে বলে জানান তিনি। কবরস্থান, বাড়ির জায়গা, ডোবা সবই তার দখলে। ২০বছর ধরে তাদের ওপর এই অত্যাচার চলছে বলে জানান মজিবুর। স্থানীয় ইউপি সদস্য মেহের আলী জায়গা দখলে মিলি বেগমকে মদদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মেহের আলী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই জায়গায় আমি একদিনই গিয়েছিলাম। ঘর ভেঙ্গে ও দেয়াল দিয়ে মিলি অন্যায় করেছে। তবে মিলি বেগম দাবী করেন জায়গাটির দলিল রয়েছে তার কাছে। আর সুরুজ আলীকে তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন টিটু বলেন, ঘটনা তদন্তকারী অফিসার তদন্ত করছেন। তাদের কোন সমস্যা থাকলেতো তারা আমার সাথে যোগাযোগ করবে