সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / শেখ হাসিনার দিল্লি থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি: জয়
Oplus_0

শেখ হাসিনার দিল্লি থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি: জয়

 

বিডি বাংলা ডেস্কঃ

শেখ হাসিনার ভারত থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত একদিন আগে নেয়া হলেও তা তখন ঘোষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, ‘তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একদিন আগে। আমরা কয়েকজন শুধুমাত্র জানতাম যে তিনি ঘোষণা দেবেন, তিনি পদত্যাগ করছেন এবং সংবিধান অনুযায়ী যাতে একটি ট্রানজিশন অব পাওয়ার হয় সেটাই ছিল ওনার প্ল্যান। তবে যখন তারা ওই গণভবনের দিকে মার্চ করা শুরু করল তখন আমরা ভয়ে বললাম যে, আর সময় নেই। তোমার এখনই বেরিয়ে যেতে হবে।’

শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল হওয়ার যে খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এসেছে, সেটি ‘গুজব’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় আওয়ামী লীগের বর্তমান-ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়েও কথা বলেছেন।

শেখ হাসিনা এখন কোথায় আছেন এবং কেমন আছেন জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘তিনি ভালো আছেন, এখন দিল্লিতে আছেন। আমার বোন (সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) উনার কাছে আছেন। আমার বোনতো দিল্লিতে থাকেন। তিনি ভালো আছেন, তবে তার খুবই মন খারাপ।

‘তিনি খুবই দুঃখিত যে দেশের জন্য উনার বাবা জান দিয়েছেন, আমার পুরো পরিবার জান দিয়েছে, যেই দেশের জন্য তিনি জেল খেটেছেন, এত পরিশ্রম করেছেন, এত উন্নয়ন করেছেন, সেই দেশের মানুষ তাকে এভাবে অপমান করে বের করে দেবে, তার ওপর আক্রমণ করতে যাবে, এটা আমরা কেউ কল্পনা করতে পারিনি।’

বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন একপর্যায়ে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং কয়েকশ প্রাণহানি হয়। শেখ হাসিনা সরকার আন্দোলনকারীদের দমনে বাড়াবাড়ি রকম শক্তি প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহল থেকে। তীব্র আন্দোলনের মুখে দ্রুত বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘বর্তমানে তাঁর রাজনীতিতে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বলেন, ‘তিনবারের মতো আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যু হলো। তিনবারের মতো সবকিছু হারিয়ে বিদেশে থাকতে হলো। আমি আর আমার মা বাদে আমরা সবাই বিদেশে অনেক দিন ধরে আছি। আমরা এখানে সেটেলড। আমাদের এখানে জীবনের কোনো অসুবিধা নেই। আমরা এখানে থাকতে অভ্যস্ত।’

সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার সন্তানরা দেশে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরবেন কি না, সেই প্রশ্নে জয় স্পষ্টভাবে বলেন, ‘তাদেরও রাজনীতিতে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

দেশে বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে জয় বলেন, তাদের ওপর নির্যাতন চলছে। আমাদের সকল মন্ত্রীদের বাসা জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়, সেটাকে পর্যন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

‘আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী, এমপিকে হত্যা করা হয়েছে। শুনতে পাচ্ছি হিন্দু ধর্মের কিছু মানুষের ওপরে হামলা হয়েছে, মন্দির ভাঙচুর হয়েছে। তো সংঘর্ষতো শুরু আগেই। আর এখন আমাদের সরকার নাই। এখনকার সংঘর্ষের জন্য আওয়ামী লীগের কোনো দায় নেই। আমরা তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করছি বিভিন্নভাবে। আওয়ামী লীগ মরে যায়নি। সবচেয়ে পুরাতন দল।’

তবে আগামীতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগকে ভোটের মাঠের বাইরে রাখা হবে বলে আশঙ্কা করছেন জয়।

তিনি বলেন, এখন তো তারা আওয়ামী লীগকে শেষ করার চেষ্টা করছে। এবং যদি নির্বাচন হয়ও, তাহলে আওয়ামী লীগকে তারা নির্বাচন করতে দেবে কি না, নেতা-কর্মীদের মাঠে নামতে দেবে কি না কিছুই জানা নেই। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আমি আমার নেতা-কর্মীদের বের হতে, বা একত্র হতে বলতে পারি না। তাদের ওপর নির্যাতন চলছে, তাদের জান বাঁচানো প্রথম দায়িত্ব।

‘আমি মনে করি দেশে যদি এখন নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতে আসবে। হ্যাঁ, ১০০ ভাগ ভোট কোনোদিন কোনো দেশে কোনো দল পায় না। আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন করলে দেশের বাকি অর্ধেক মানুষ কি মানবে? দেশের অর্ধেক মানুষ আওয়ামী লীগের সমর্থক, তারা মানবে না।’

এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনে শেখ পরিবারের ভূমিকা নেওয়া উচিত কি না– সেই প্রশ্নে জয় বলেন, ‘এটা আর উচিতের বিষয় নয়। প্রশ্ন হল যে, আমাদের কি তারা নির্বাচন করতে দেবে? নির্বাচন যদি নাই করতে দেয়, মারধর করতে থাকে, তাহলে তো সেই চেষ্টা করে লাভ নেই। শুধু শুধু মানুষ মরে যাবে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও জানান জয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে জয়ের কথা হল, ‘আমার কোনো মতামত নেই এ বিষয়ে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজতো অনেকদিন ধরেই চাইছেন তিনি যেন দেশ চালানোর সুযোগ পান। এখন তিনি সেই সুযোগ পাচ্ছেন। কীভাবে দেশ চালাবেন আমি দেখতে চাই, দেখার অপেক্ষায় আছি। একটা দেশ চালানো তো অত সহজ কথা না, তো দেখি।’

শেখ হাসিনার সরকার না থাকায় শিগগিরই দেশের মানুষ ‘আফসোস’ করবে মন্তব্য করে জয় বলেন, শিগগিরই তিনি ভারতে যাবেন তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তবে সেই দিনতারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ আজ : আলোচনায় সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ

  সদরুল আইন: অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ...