সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / শীর্ষ কলামঃ কোটা আন্দোলনের লাগাম শিবিরের হাতে,তারেকের ফোনেই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট

শীর্ষ কলামঃ কোটা আন্দোলনের লাগাম শিবিরের হাতে,তারেকের ফোনেই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট

 

সদরুল আইনঃ

কোটা আন্দোলন নতুন মাত্রা গ্রহণ করেছে। আজ দুপুর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ প্রায় অচল হয়ে গেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সশস্ত্র অবস্থায় ঢাকার রাজপথগুলোতে রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ তাদেরকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও কার্যত ঢাকার রাজপথগুলো ছিলো কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দখলে।

শুধু ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। আর এই সমস্ত সংঘর্ষের কারণে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে জনমনে।

তীব্র এক অসহনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই কর্মস্থলে গিয়ে ফিরতে পারেননি। অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়ে গেছেন। তীব্র যানজট এবং নিরাপত্তাহীনতার এক আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে গোটা দেশজুড়ে। আর এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে একটি টেলিফোন থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে তার চীন সফরের উপর একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন গত রোববার। সেই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন যে, মুক্তিযোদ্ধার নাতি এবং রাজাকারের নাতি যদি সমান যোগ্যতাসম্পন্ন হয় তাহলে কে প্রাধান্য পাবে? প্রধানমন্ত্রী উত্তরে বলেছিলেন, অবশ্যই রাজাকারের নাতি পুতি নয়, মুক্তিযোদ্ধার নাতি পুতিরাই প্রাধান্য পাবে।

আর এই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং সেখানে স্লোগান দেওয়া হয়- ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’। রাজাকারদের উত্তরাধিকারদের এই দম্ভোক্তি ছিল পরিকল্পিত এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা।

উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ২ ঘণ্টা পরেই রাত ৮টার দিকে বিভিন্ন স্থানে কোটা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে টেলি কনফারেন্সে যুক্ত হন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।

তখন তারেক জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদেরকে রাজাকার হিসেবে সমর্থন করেছেন। এরকম পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদেরকে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা করার জন্য নির্দেশনা দেন তারেক জিয়া।

তারপরেই ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মিছিল শুরু করে এবং রাজাকারদের পক্ষে স্লোগান দেয়। আর এই স্লোগানের পর পরই সারা দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

একটি টেলিফোনই পাল্টে দেয় পুরো দৃশ্যপট।

রোববারের রাতের পর থেকে প্রতিনিয়ত তারেক জিয়া সার্বক্ষণিকভাবে কোটা আন্দোলনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং তাদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছে। এই কোটা আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ দেওয়ার জন্যই তারেক জিয়ার নীল নকশা এখন বাস্তবায়ন চলছে।

কোটা আন্দোলনে যারা নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের প্রথম অংশটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের। কিন্তু দ্বিতীয় অংশে যারা রয়েছেন, অর্থাৎ যারা নীতি নির্ধারক হিসেবে আন্দোলনের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো চূড়ান্ত করছে, তারা হয় ছাত্রদল নয়তো ছাত্রশিবিরের ক্যাডার। আর তারাই এখন আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।

আজকে ঢাকা শহরে এই আন্দোলনের পুরো নেটওয়ার্ক এসেছে ছাত্রশিবিরের মাধ্যমে এবং ছাত্রশিবিরের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে আন্দোলনের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। আর এই আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছেন তারেক জিয়া।

আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এ কথা স্বীকার করেন যে, তারেক জিয়া টেলিফোনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ আজ : আলোচনায় সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ

  সদরুল আইন: অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের ...