সর্বশেষ সংবাদ
Home / ধর্ম / যেসব কারণে শয়তান আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত

যেসব কারণে শয়তান আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত

ইসলামিক ডেস্ক : পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু শয়তান। তার একমাত্র মিশন হলো, মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া। মানুষের ইহকাল-পরকাল ধ্বংস করে দেওয়া। শয়তানের এমন কিছু মন্দ কাজ ছিল, যার কারণে সে চিরকালের জন্য আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।

নিম্নে এমন কিছু অভ্যাস সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. হিংসুক : এই অভ্যাসটির কারণেই মূলত সে আদম (আ.)-কে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মানুষকে মহান আল্লাহ সম্মানিত করেছেন, এটা সে হিংসার কারণে মেনে নিতে পারছিল না, তাই হিংসার বশবর্তী হয়ে সে মহান আল্লাহর আদেশ অমান্য করে বসল। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, ‘তোমরা আদমকে সিজদা করো।’ তখন তারা সিজদা করল, ইবলিশ ছাড়া। সে অস্বীকার করল এবং অহংকার করল। আর সে হলো কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৪)

২. অহংকারী : এটি শয়তানের অভিশপ্ত হওয়ার আরেকটি কারণ। মহান আল্লাহ যখন আদম (আ.)-কে সিজদা করার আদেশ দেন, তখন সে অহংকার প্রদর্শন করে বলে, “তিনি বললেন, ‘কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছে যে সিজদা করছ না, যখন আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছি’? সে বলল, ‘আমি তার চেয়ে উত্তম। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি থেকে।” (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১২)

৩. অভিশপ্ত : তার অহংকার দেখে মহান আল্লাহ তাকে অভিশপ্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘বেরিয়ে যাও এখান থেকে। কারণ তুমি হলে অভিশপ্ত। (সুরা : হিজর, আয়াত : ৩৪)

৪. অবাধ্য : শয়তানের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, সে সব সময় আল্লাহর আদেশের অবাধ্য থাকে। এই অবাধ্যতার ধারাবাহিকতা শুরু হয় আদম (আ.)-কে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানানো থেকে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তার এই বৈশিষ্ট্যটির কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে হিফাজত করেছি। (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ৭)

৫. কুমন্ত্রণাদাতা : শয়তানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কুমন্ত্রণা দেওয়া। সে মানুষকে সব সময় কুমন্ত্রণা দিতে থাকে, বিশেষ করে যখন মানুষ আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত হয় তখন সে বিভিন্ন রকম কুমন্ত্রণা দিয়ে মানুষের সেই ইবাদত নষ্ট করতে চায়। মানুষের অন্তরের পবিত্রতা বিনষ্ট করতে চায়। পবিত্র কোরআনে তার এই বৈশিষ্ট্যের কথাও উল্লেখ আছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, বলো, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির, মানুষের প্রকৃত ইলাহর কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্টতা থেকে। যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। জিন ও মানুষ থেকে। (সুরা : নাস, আয়াত : ১-৬)

৬. সীমা লঙ্ঘনকারী : সীমা লঙ্ঘনকারীকে আরবি ভাষায় ‘তাগুত’ বলা হয়। এটাও শয়তানের একটি বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাগুতকে অমান্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, দ্বিন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয়ই হিদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব, যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হওয়ার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৬)

৭. অনৈতিক কাজে উদ্বুদ্ধকারী : শয়তানের মূল মিশন হলো, মানুষকে অনৈতিক ও অশ্লীল কাজে উদ্বুদ্ধ করে আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল রাখা। আল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অযৌক্তিক কথাবার্তা বলানো। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই সে তোমাদের আদেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজের এবং আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলতে, যা তোমরা জানো না। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৯)

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

জু’মআর নামাযঃ  ফযিলত ও গুরুত্ব

মাওলানা সাইফুল ইসলামশি,ক্ষক: মাদরাসাতুল হিকমাহ,ঢাকা: ২৪ ফিট, রসূলবাগ, কদমতলী, ঢাকা   একজন ব্যক্তি ঈমান আনার ...