সংসারের খরচ বাবদ একটা অংশ ব্যয় হয় দিনের খাবারের আয়োজনে। সেজন্য বাজারের পরিকল্পনাটা খুব জরুরি। মাসের আয় থেকে কত টাকা খাবারে ব্যয় করবেন তার মানসিক প্রস্তুতি রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে আগে থেকেই তালিকা করে নিন। এভাবে পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমন্বয়ে আপনার মানসিক যন্ত্রণা কম হবে।
বাজেট করা জরুরি
জনপ্রিয় বই অল ইয়োর ওর্থ: দ্য আলটিমেট লাইফটাইম মানি প্ল্যান বইটির কিছু বিষয় এখানে মনে রাখা জরুরি। তাদের হিসেব থেকেই আমরা একটি ভাগ করে নিচ্ছি। যদি কেউ মাসে ১ লাখ টাকা আয় করেন তাহলে সেটি ৫০, ৩০, ২০ হাজার এই তিন অংশে ভাগ করে ফেলুন। ভাগ অবশ্য আপনার চাহিদা অনুসারে করুন। যত কষ্টই হোক, সঞ্চয় খাতে যাবে ২০ হাজার, ৩০ হাজারে নিজের শখ মেটাবেন, বাকি ৫০ হাজার যাবে নিত্য খরচে। এই ৫০ হাজারের মধ্যেই আপনার বাড়ি ভাড়া, বাজার খরচসহ নানান রকম খরচ শোধ করার চেষ্টা করবেন।
বাজারে গেলে মানিয়ে নেওয়া
বাজারে আপনার চোখের হিসেবে পণ্য বাছাই করুন। চেষ্টা করুন কমদামি পণ্য কেনার। অনেকের এখন রান্নাকে একটু আয়েশি করার শখ থাকে। তাই কিছু পণ্য আপনাকে না কিনেই থাকতে হবে। মাসের শুরুতেই ভাড়া ও বিলের টাকা এক পাশে রেখে বাজারের টাকা আলাদা করুন। এবার বাজারের টাকা দিয়ে কীভাবে কী করবেন তা বাসার সবার সঙ্গে আলোচনা করুন। ভেবে দেখুন, কীভাবে এই টাকা আপনি খরচ করবেন। মাসের শুরুতেই যদি মুদিপণ্য কিনে ফেলা যায় তাহলে ভালো। টাকা কিছুটা সাশ্রয় হবে, তেমন সময় ও শ্রম কম লাগবে। অনেকেই বাজারে গেলে পণ্য কেনেন এবং খুচরো আকারে কেনেন। খুচরো আকারে কিনলে সমস্যা।
পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের হিসেব করা জরুরি। কারণ একজন ব্যক্তির খাবারে প্রতিদিন শর্করা (কার্বহাইড্রেট), আমিষ, প্রোটিন, খনিজ লবণ ও ভিটামিন থাকা দরকার। দরকারি উপকরণের কথা মাথায় রেখেই বাজার করা জরুরি। অনেকেই ভাবেন প্রোটিন প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটি সত্য নয়।
খাবারে পুষ্টিগুণের সমন্বয়
ধরুন একদিন আপনি রুটি ও ডিম খেলেন নাশতায়। তারপরের দিন মেন্যু হবে ডাল ও রুটি। দুই দিন প্রোটিন, এক দিন ব্যালেন্সড, এক দিন নিরামিষ-এভাবে খাবারের মেন্যু ঠিক করে নেওয়া যায়। শীত আসছে তাই খিচুড়ি ব্যালেন্স ডায়েট হিসেবে একটি উপায়। নাশতায় প্রতিদিন দামি খাবার না রেখে ছোলা বা নুডলস রাখতে পারেন। বাদাম বাড়িতে রাখতে পারেন। রোজ দুধ না রাখতে পারলে বাদাম ব্যালেন্স করবে। দুধের বদলে চিনাবাদাম খেলেও ক্ষতি নেই। প্রতিদিন শাকের একটি মেন্যু রাখতে পারেন। শাকের দাম কম এবং পুষ্টিও অনেক।
বাজারে তালিকা নিয়ে যান
বাজারে গেলে অবশ্যই তালিকা নিয়ে যাবেন। শুধু শুধু ঘুরে লাভ নেই বরং আপনাকে দেখতে হবে তালিকার পণ্য পাওয়া যায় কি-না। আগে পরিবারের সদস্য সংখ্যা হিসাব করা দরকার, তারপর কোন জিনিস কতটুকু কিনবেন হিসাব করুন।
কোনো মাসে কোনো পণ্য বেশি থাকলে তা দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবেন না। বাড়তি অংশ পরের মাসে যোগ হওয়ায় কিছু টাকা সাশ্রয় হবে, যেটা চাইলে সঞ্চয়ে যুক্ত করতে পারেন। খাবারের জন্য মাসের শুকনা বাজারগুলো মাসের শুরুতেই করা উচিত। কাঁচা বাজারটার ক্ষেত্রে কিছু স্বাধীনতা পাবেন।