দেশবাংলা রিপোর্ট:
হবিগঞ্জের মাধবপুরের বুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও তার ভাইদের একটি ড্রেজারে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে লিটন সবর (৪২) নামের এক চা শ্রমিকের মর্মান্তিক প্রানহানি ঘটেছে।
জানা যায়, লিটন সুরমা চা বাগানের রবি সবরের পুত্র। গত শনিবার দুপুর দুইটার দিকে এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও তার অনান্য ভাইদের নেতৃত্বে গারগ্রাবাড়ী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল।
এই কাজে তারা যে ড্রেজারটি ব্যবহার করে তাতেও তারা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে।
বালু উত্তোলনের ব্যাপারে সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে একজন জন প্রতিনিধি প্রসাশনের নাকের ডগায় কিভাবে এই অবৈধ কাজ বছরের পর বছর করে যাচ্ছে সেই প্রশ্ন রাখেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, উল্লেখিত চেয়ারম্যানগংরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে এলাকার মসজিদ মাদ্রাসা এবং ঘরবাড়ি ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিলেও তাদের এ অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।তারা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং প্রশাসন ম্যানেজ করে চলায় তাদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না এলাকাবাসি।
এলাকাবাসি জানান, চেয়ারম্যান ও তার ভাইরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেন না।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বিশাল স্তুপ আকারে রাখা হলেও প্রশাসন সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করেন না।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন লিটন সবর ও তার প্রতিবেশী প্রদীপ তাতী নদীতে কুচিয়া ধরতে যায়।একসময় তারা ক্লান্ত হয়ে পানি পান করার জন্য বালু উত্তোলনরত অবৈধ ড্রেজার মেশিনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ঘটনা স্থলে লিটন সবরের মৃত্যু হয়।
এসময় খবর পেয়ে মাধবপুর থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।রবিবার ময়না তদন্তশেষে লিটন সবরের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় লিটন সবরের ফুফাতো ভাই রঞ্জন সবর বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
মাধবপুর থানার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম খান ময়না তদন্ত শেষে মামলা দায়ের করার ঘটনাটি স্বীকার করেন।তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে অবৈধ ড্রেজার ও বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হবে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, লিটন সবরের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার পর উক্ত ড্রেজারটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছে।এছাড়া
এই মৃত্যুকে ধামাচাপা দিতে চেয়ারম্যান ও তার ভাইয়েরা সুপরিকল্পিত ভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে মৃত্যুর ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত হলে উক্ত চেয়ারম্যানের অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ এবং লিটন সবরের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাটি প্রকাশ্যে চলে আসবে।