সর্বশেষ সংবাদ
Home / ফিচার / বাহারি ফুলে সেজেছে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস

বাহারি ফুলে সেজেছে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস

তানভীর আহমেদ তানিম:
 উপকূলীয় অক্সফোর্ড খ্যাত বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। ১০১ একরের এই ক্যাম্পাস প্রত্যেক ঋতুতে নতুনভাবে নিজেকে সাজিয়ে তোলে।
গ্রীষ্মে প্রকৃতি যখন নতুন রূপে সাজে তখন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও তার নিজ সাজ বদলায়। সারা বছরই সৌন্দর্য আর স্নিগ্ধতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাতিয়ে রাখলেও গ্রীষ্মকাল একটু ভিন্নতা আনে নোবিপ্রবির রূপে।
ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে প্রতিটা প্রান্তেই দেখা মেলে বাহারি সব ফুলের। ছবির মতো এই ক্যাম্পাসটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এসব ফুলের কারনে।
কৃষ্ণচূড়া,শিউলি,কদম,বকুল,কাঠ গোলাপ, নাগবল্লী বা পত্রলেখা, অলকানন্দা, রুদ্রাক্ষ ফুল,রাঁধাচূড়া, করবী,কাঁটামেহেদী,নয়নতারা,জারুলফুল, বাগানবিলাস, সন্ধামালতী,রঙ্গণ,ঘাসফুল সহ অসংখ্য প্রজাতির ফুল যেন ক্যাম্পাসকে স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। প্রধান ফটকের প্রবেশপথে এগিয়েই রয়েছে বকুল ও বিভিন্ন রঙের ছোট ছোট ফুল গাছের সমারোহ।
তারই পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ রক্তবর্ণ ধারণ করে সজ্জিত করে রেখেছে ভাষা-শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত শহীদ মিনার। রঙিন ফুল গুলো নিজেদের সবটুকু রঙ ছড়িয়ে যেনো দর্শনার্থীদের ডাকছে ১০১ একরের ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখার জন্য।
প্রধান ফটক থেকে একটু সামনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে রয়েছে বিভিন্ন ফুলের মেলা। এখানে বাহারি সব ফুলের গাছ রঙ ছড়াচ্ছে চারদিকে। বিকালে বাইরে থেকে দর্শনার্থীরা এসে ছবি তোলায় মেতে ওঠে এখানে। জয় বাংলা চত্বরে রয়েছে করবী,রঙ্গণ ফুল। যা অনেক দূর থেকে মানুষকে আকৃষ্ট করে তার সৌন্দর্যে।
এছাড়া, অডিটোরিয়ামের প্রবেশ পথে দেখা মেলে ভিন্ন সব ফুলের। লাল, সাদা বিভিন্ন রঙের আলাদা ফুলের গাছ শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে এখানের। রয়েছে বেশ কিছু পাতা বাহার গাছ।
জয় বাংলা চত্বরের ঠিক সামনে হাতছানি দিচ্ছে বকুল, সেজে আছে জারুলফুল। গ্রীষ্মের দিনে বকুলের গন্ধে ভরে গেছে চারিদিক। সেই সাথে কৃষ্ণচূড়া শহীদ মিনারের শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি পড়ে শহীদ মিনার রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে, যেন আজো শহীদদের রক্তে লাল হয়ে আছে।
ক্যাম্পাসের অন্য সব জায়গার কৃষ্ণচূড়া থেকে বেশি চোখে পড়ে শহীদ মিনারের আশেপাশে কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছের উপর। এই গাছ গুলোর ফুল অনেক দূর থেকে মানুষের চোখে আটকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হতাশার মোড় থেকে শান্তিনিকেতন যেতে রাস্তার পাশে বকুলের সারি সারি গাছ শোভা ছড়াচ্ছে।বকুল ফুলের মাতাল করা ঘ্রান শিক্ষার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।এবং মনে পরে যায় সবার মুখে মুখে থাকা গানের কলি “বকুল ফুল, বকুল ফুল, সোনা দিয়া হাত কেন বান্ধাইলি”। সকল পথচারীর আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু হতে বাধ্য। এ ছাড়াও খাদিজা হলের গা ভেসে আছে বাগানবিলাস,সামনে রয়েছে বকুলফুল গাছ। যা এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মালেক উকিল হলের সামনে ফুটেছে বিভিন্ন ধরনের ফুল। রঙ্গণ,নয়নতারা,সন্ধ্যামালতী,অলকানন্দা,নাগবল্লী বা পত্রলেখা এবং জবা। হলের ভিতরে ও বাহিরে রয়েছে লাল,সাদা রঙের নয়নতারা।হলের গেটে শোভা ছড়াচ্ছে অলকনন্দা এবং বাহিরে লাল সাদা রঙের ঘাসফুল সহ বিভিন্ন ফুল।
গ্রীষ্মের তাপদাহে যখন সকলে একটু প্রশান্তির খোঁজে ব্যস্ত ঠিক তখনি এসব ফুলের সুবাস প্রকৃতি প্রেমীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চারদিকে মন মাতানো সব ফুলের সৌন্দর্যে অনেকে আবার কবি হয়ে উঠেন। পড়ন্ত বিকেলে কৃষ্ণচূড়ার নিচে দেখা মিলে প্রেমিক-প্রেমিকার ফটো সেশন।
সবুজ শ্যামল ক্যাম্পাসে সাদা ঘাসফুল ফোটে প্রকৃতিকে যেন নতুন রূপে সাজিয়েছে। সবুজ ঘাসের বুকে সাদা ঘাসফুলের দোল খেলা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যায়। মনে হয় আমাদের ইশারায় ডেকে বলে, এসো গল্প করি কোনো এক অজানার।
এছাড়াও প্রত্যেক হলের সামনে রয়েছে আলাদা আলাদা ফুলের বাগান। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ফুল। এগুলো আবাসিক হলের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দের জাগরণ সৃষ্টি করে।
ব্যস্ত সময়ে একটু অবসরের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের গল্প আড্ডায় জমে উঠে ফুলের বাগিচাগুলো। বন্ধুরা পড়ন্ত বিকেলে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গোল হয়ে বসে আড্ডায় মেতে ওঠে ঘাসফুলের সঙ্গে। কেউ ব্যস্ত সেলফি তুলতে, কেউ ব্যস্ত বন্ধুদের সাথে দল বেধে ছবি তুলতে। কেউবা প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে মনের অজানা গন্তব্যে। এভাবেই নোবিপ্রবি আপন মনে বাহারি সব ফূলের সৌন্দর্যে সেজেছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

বাঁশের তৈরি পণ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন পাটুনিরা 

রনজিত রায় – নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর প্রতিনিধি:: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার তর্পন ঘাট (গোলাবাড়ি ...