সর্বশেষ সংবাদ
Home / সারাদেশ / খুলনা বিভাগ / প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অঞ্জনার সংবাদ সম্মেলন

প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অঞ্জনার সংবাদ সম্মেলন

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ হয়নি অঞ্জনা রানীর। জন্মের পর থেকেই সে অন্ধ। তবুও জীবন-যুদ্ধে থেমে থাকেননি তিনি। অঞ্জনার সামনে কোনো সংকটই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। জন্মান্ধ হয়েও জীবন-সংগ্রামে দমে যাননি এই নারী। দৃষ্টিহীনতা আর দারিদ্রের সাথে একাই লড়াই করে ইতিহাস বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এরপরও কোনো চাকরি না পেয়ে গান গেয়ে ও টিউশনি করে সংসার চালান অঞ্জনা।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে তার পরিবারের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার অভাব-অনটন আর নানা সংকটের মাঝে নিজের উদ্যম আর ইচ্ছা শক্তি দিয়ে লেখাপড়া শেষ করার কথা জানান। নানা-প্রতিবন্ধকতার পরও লেখাপড়ায় সফল হয়ে সমাজে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান। প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকলে মানুষ পৃথিবীকে জয় করতে পারে। সেটিই করে দেখিয়েছেন অঞ্জনা রানী।

অঞ্জনা রানী অদ্যম মনোবল নিয়ে এখন চালিয়ে যাচ্ছেন জীবন যুদ্ধ। শুধু তাই নয়,বর্তমানে তিনি চাকরির পড়াশোনা, সংসারের কাজ, টিউশনি, গানের অনুষ্ঠানসহ নানান কাজে সময় পার করছেন। অঞ্জনা রানীর জন্ম ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারি। তিনি কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র আমলাপাড়া এলাকার বিবি নন্দি রোডের পুরাতন আনসার অফিসের সরকারি জায়গায় বসবাস করেন। হতদরিদ্র ফুটপাতে চা বিক্রেতার পরিবারে তার জন্ম। পরিবারে তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে অঞ্জনা সবার বড়। তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকুরিজীবী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশ ও দেশের মানুষকে সেবা করা। কিন্তু মাস্টার্স পাস করেও প্রতিবন্ধী হওয়ায় সরকারি চাকরি জোটেনি অদম্য মেধাবী অঞ্জনা রানীর কপালে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চাকরি চান। একই সাথে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ চান অঞ্জনা।

২০০৬ সালে কুষ্টিয়া হাই স্কুল থেকে এসএসসিতে ভাল ফলাফল করে ভর্তি হন ইসলামিয়া কলেজে। সেখান থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগে ২০১৩ সালে অনার্স ও ২০১৪ সালে মাস্টার্স পাস করে সবাইকে চমকে দেন তিনি।

অঞ্জনা রানী সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, অভাব আর দৃষ্টিহীনতার মাঝে অনেক দুঃখ-কষ্টে বেড়ে উঠতে হয়েছে জীবন যুদ্ধ করে। প্রতিনিয়ত পদে পদে সংকট আর সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমি কোনোদিন থেমে যায়নি। মনোবল নিয়ে বাস্তবতার সাথে জীবনের যুদ্ধে সফলতা ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করেছি, এখনও করছি। জীবনে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। বাবা-মায়ের সহযোগিতা ও আমার নিরলস কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এতো দূর পৌঁছেছি। আমার মেধা আছে, তবুও চাকরি হচ্ছেনা। প্রতিবন্ধী হওয়ায় মাস্টার্স পাশ করেও চাকরি পাচ্ছি না। এখন একটা সরকারি চাকরি চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। আমি তার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ চাই। তাকে জীবন যুদ্ধের গল্প শুনিয়ে একটি সরকারি চাকরি ভিক্ষা চাইবো। চাকরি পেলে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

বেনাপোল পুটখালী সীমান্তে র‌্যাবের অভিযানে ৩৯৭ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক ১ 

  আনোয়ার হোসেন নিজস্বপ্রতিনিধি,যশোরঃ যশোরের বেনাপোল পুটখালী সিমান্তে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাবের ...