ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে নারীর কপালে পিস্তল ঠেকানোর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) বন্যা বেগম নামের ওই ভুক্তভোগী নারী এ অভিযোগ করেন। তবে মামলাটি নথিভুক্ত করেনি আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শওকত আলী জানান, মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ তার ৮ সহকর্মীকে আসামি করা হয়। তবে সহকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। মামলায় বন্যা বেগমের স্বামীর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদীপক্ষের কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।
মূল আসামি হলেন এনামুল কবীর, যিনি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এসে এ ঘটনা ঘটান। সোমবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে মামলার কপি আদালতে জমা দেওয়া হয়। তবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (দ্রুত বিচার আইন) এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি কিংবা শুনানি বিষয়েও কিছু বলেননি। ফলে, মামলাটি নথিভুক্ত হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত কার্যক্রম সোমবার সকাল থেকে শুরু করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল বিল্লাল হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ওসি ক্রাইম হাবিবুল্লাহ বাহার।
মামলার আবেদন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার থলিয়ারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম নুরুর বিরুদ্ধে সদর থানায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের মামলা হয়।
এতে অভিযোগ আনা হয়, নুরুল ইসলাম সৌদি আরব থেকে আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। এ ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন।
সেই মামলায় গত শুক্রবার বিকালে প্রবাসী নুরুল ইসলামকে ধরতে সাদা পোশাকে অভিযানে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিমসহ আরও কয়েকজন। প্রবাসী নুরুকে না পেয়ে বাড়িতে থাকা নারীসহ উপস্থিত মেহমানদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তারা নুরুল ইসলামের স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ বাবাসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজনকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে।
একপর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম প্রবাসীর স্ত্রী বন্যার কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ঘরে থানা নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
তবে অভিযুক্ত গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিমের দাবি, প্রবাসী নুরুল ইসলামকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে তার পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে ধস্তাধস্তির সময় তার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারও দিকে পিস্তল তাক ও মারধর করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা, সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি।
তদন্ত টিমের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশেষ শাখা মো. জয়নাল আবেদীন জানান, তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনাটির আইনগত সব বিষয় দেখছি। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য শোনা হচ্ছে। তারা কীভাবে ঘটনাস্থলে গিয়েছে সে সব দেখা হচ্ছে। আশা করছি ৩ কার্যদিবসেই প্রতিবেদন দিতে পারব।
পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।