কামাল হোসেন : ঝিকরগাছায় ১৯টি রেলক্রসিংয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে ট্রেন চলাচল, নেই গেট ম্যান ও প্রহরী। অনেক দিন ধরেই যশোর-বেনাপোল কমিউটার ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু ঝিকরগাছা উপজেলার সীমানার মধ্যেই রেলক্রসিংয়ের ১৯টি স্থানে গেইটম্যান বা গেইটবার নেই। ফলে এলাকাবাসী প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এসব রেল ক্রসিং পারাপার হচ্ছেন। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যশোর-বেনাপোল রেললাইনের ঝিকরগাছা সীমানার নওয়াপাড়া (নতুনহাট বাজার) থেকে নাভারন পুরাতন বাজারে ২৫টি রেলক্রসিং পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নওয়াপাড়া (নতুনহাট বাজার), যশোর-বেনাপোল সড়কের লাউজানী গেইট, পৌরসদরের হাসপাতাল মোড়, ঝিকরগাছা বাজার (সিনেমা হল রোড), ঝিকরগাছা-বাঁকড়া সড়কের কাউরিয়া মুন্সিপাড়া ও গদখালীর পটুয়াপাড়া এই ছয়টি স্থানে রেলওয়ে অনুমোদিত গেইটম্যান ও গেইটবার রয়েছে।
বাকি ১৯টি স্থানে গেইটবার না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। এগুলো হলো- ঝিকরগাছা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর, লাউজানী বাজার, মল্লিকপুর মোড়, কীত্তিপুর জমিরশাহ্ দরগা, ট্রাক টার্মিনাল, হঠাৎপাড়া, পুরান্দরপুর, হাজেরালী, বামনালীর তিনিটি স্থান, সৈয়দপাড়া, টাওরা, গদখালী, শরীফপুর, আমিনী, চান্দেরপোল, বাদে-নাভারন, নাভারন পুরাতন বাজারে কোনো গেইটম্যান বা গেইটবার নেই।
সম্প্রতি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রাক টার্মিনালের রেলক্রসিংয়ে দুপাশে রেলপাতি দিয়ে ক্রসিং বন্ধ করে দেন। এছাড়াও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে লাউজানী বাজার, কীর্তিপুর জমিরশাহ্ (পূর্বে গেইট ছিল), শরিফপুর ও নাভরন পুরাতন বাজার।
কীত্তিপুর জমিরশাহ্ দরগা এলাকা সংলগ্ন বীর মুক্তিযোদ্ধা গণি মিয়া জানান, রেল লাইন পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনার ঘটেই চলেছে। প্রায়ই গরু-ছাগল ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে। আমাদের এই স্থানটি খুবই দুর্ঘটনাপ্রবল স্থান। এইস্থান দিয়ে সবসময় ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়। এখানে একটি গেইটবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত ২৪ এপ্রিল জয়কৃষ্ণপুর মোড়ে স্কুল ভ্যানে ট্রেনের ধাক্কায় স্কুল ভ্যানটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী। এছাড়া কীর্তিপুর জমিরশাহ্ মোড়ে এক নছিমন চালক নিহত হন। এছাড়া প্রায়ই ছোট-খাটো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যশোর-বেনাপোল রেলওয়ে সড়কের এসব স্থান পরিদর্শন করে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিংগুলোর গেইটম্যানসহ গেইটবার লাগানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।