গেল বছর করোনার প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে সারা বিশ্বে বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ। এ সময় বিশ্বে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) হয়েছে ১ দশমিক ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালে এসেছিল ৯২৯ বিলিয়ন ডলার। এ সময় উন্নয়নশীল বিশ্বে বিনিয়োগ প্রবাহের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।
২০২০ সালের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এই অঞ্চলের বিনিয়োগ। ইউরোপে বেড়েছে ৮০ শতাংশের বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিগুণ বেড়েছে বিনিয়োগ। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাড প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ইনভেস্টমেন্ট ট্রেন্ডস মনিটর শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে এফডিআই প্রবাহ বেড়েছে, কিন্তু এটি টেকসই হওয়ার বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে ২০২২ সাল নিয়ে আশাবাদী আঙ্কটাড। এর পরেও উন্নয়নশীল বিশ্বে ভ্যাকসিন কার্যক্রম, অবকাঠামোর বিনিয়োগ ঘাটতির কারণে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, অর্থনীতির সবুজ খাতে বিনিয়োগ করোনার পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ নিচে রয়েছে। শুধু তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করোনা-পূর্ববর্তী সময়ের মতো হয়েছে। তবে প্রকল্পে বিনিয়োগ করোনার পূর্ববর্তী পর্যায়ে আসেনি। প্রকল্পে বিনিয়োগের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে তুলনামূলক বেশি বিনিয়োগ হয়েছে।
বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এফডিআই ১১৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে দেশটিতে ৩২৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। চীনে বেড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। দেশটিতে ২০২১ সালে ১৭৯ বিলিয়ন ডলারের এফডিআই এসেছে। তবে ভারতে ২৬ শতাংশ এফডিআই কম এসেছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বড় অর্থনীতির বেশির ভাগ দেশে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছিল করোনার ধাক্কায়। সে হিসাবে বিনিয়োগ অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। স্বল্পন্নোত দেশ বা এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতেও করোনার আঘাতে বড় ক্ষতি হয়েছে। এসব দেশে অবকাঠামোর উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। প্রবৃদ্ধির চাকা ঘোরাতে বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় শঙ্কা দেখছে আঙ্কটাড। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শ্রমিক সংকট এবং দুর্বল সরবরাহব্যবস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এফডিআই প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। তবে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি করোনার আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। আফ্রিকায়ও বিনিয়োগ বেড়েছে।