সর্বশেষ সংবাদ
Home / ধর্ম / কোরআন ও হাদিসের আলোকে রিজিক কী

কোরআন ও হাদিসের আলোকে রিজিক কী

ইসলামিক ডেস্ক : দিনের শুরু থেকে আমরা সবাই জীবিকার জন্য কমবেশি দৌড়াই। জীবনের জন্য আমাদের রিজিক অথচ রিজিক মানেই শুধু ধন-সম্পদ অর্থবিত্ত বৈভব যে নয় তা আমরা মানতে নারাজ। আমরা রিজিক বলতে বুঝি ধন-সম্পদ আর অর্থ টাকা কড়ি। অথচ রিজিকের সর্বনিম্ন স্তর হচ্ছে টাকা-পয়সা অর্থ ও সম্পদ। আমাদের জানতে হবে রিজিকের স্তর কয়টি ও কী কী?

রিজিকের সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা। রিজিকের সর্বোত্তম স্তর হচ্ছে পুণ্যবান স্ত্রী এবং পরিশুদ্ধ নেক সন্তান এবং পরিপূর্ণ স্তর হচ্ছে মহান রব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি। আমাদের মনে রাখতে হবে রিজিকের ফয়সালা একমাত্র আল্লাহর।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘এবং তিনি তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন যার উৎস সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা আত ত্বালাক, আয়াত ৩)।

রসুল (সা.) বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর ওপর যথাযথ ভরসা করতে, তবে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের পাখির ন্যায় রিজিক দান করতেন। পাখি সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় বাসা থেকে বের হয়ে যায় এবং সন্ধ্যায় উদরপূর্তি করে ফিরে আসে।’ (মুসনাদে আহমদ, ১/৩০, তিরমিজি, ২৩৪৪)।

দুনিয়ার সব কিছুই আল্লাহ রব্বুল আলামিন সৃষ্টি করেছেন মানুষের উপকারের জন্য। এ প্রকৃতি, নদী, সাগর, ফুল-ফল, মাছ, পশুপাখি সব কিছুই করে দিয়েছেন মানুষের অধীন ও তার উপকারের জন্য। কিন্তু মানুষকে তিনি বানিয়েছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর গোলামি করার জন্য। সুতরাং বান্দার রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহরই দায়িত্ব।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, কেননা আল্লাহ তাঁর নেয়ামত থেকে তোমাদের রিজিক প্রদান করেছেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে (রসুলকে) ভালোবাস আর আমার ভালোবাসা পেতে হলে আমার আহলে বাইতকে (আনুগত্যকে) ভালোবাস।’ (তিরমিজি শরিফ ও মিশকাত শরিফ)।

রিজিকের হ্রাস বৃদ্ধি হলো বান্দার জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। সে জন্য আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব, কখনো ভয় ভীতি কখনো অনাহার দিয়ে কখনো তোমাদের জানমাল ও ফসলাদির ক্ষতি ও সন্তান হানির মাধ্যমে। এমন পরিস্থিতিতে তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)।

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানুষ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। ধন-সম্পদ সংগ্রহে উত্তম পন্থা অবলম্বন কর। কেননা কেউ তার রিজিক পরিপূর্ণ না করে মৃত্যু বরণ করবে না। যদিও তা অর্জনে বিলম্ব হোক না কেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

আল্লাহ আরও বলেন, ‘এমন কে আছে, যে তোমাদের রিজিক দান করবে? যদি তিনি তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন?’ (সুরা মুলক, আয়াত ২১)।

সুতরাং আমাদের বুঝতে হবে রিজিক দানের মালিক একমাত্র আল্লাহ রব্বুল আলামিন। সুতরাং তিনি যদি আমাদের রিজিক বন্ধ করে দেন তাহলে এমন কে আছে আমাদের উত্তম রিজিক দান করবে? আল্লাহ রব্বুল আলামিন হলেন সর্ব শক্তিমান ও মহাপরাক্রমশালী। তিনিই হলেন উত্তম রিজিকদাতা।

আমাদের মনে রাখতে হবে রিজিক মানে শুধু খাদ্য সামগ্রী আর সম্পদ নয়। বরং জীবন-উপকরণের সব কিছু। আবার আল্লাহ সবাইকে সমান ভাবে রিজিক দান করেন না। তিনি বলেন, ‘যদি আল্লাহ তায়ালা তাঁর সব বান্দাদের প্রচুর রিজিক দান করতেন, তাহলে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। বরং তিনি যে পরিমাণ চান তার জন্য ততটুকুই রিজিক নাজল করেন।’ (সুরা শুয়ারা, আয়াত ২৭)।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের খাওয়াবেন- এ কথা বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। রিজিককে কর্মের মাধ্যমে খুঁজতে হবে। প্রত্যেকের রিজিক তার কর্মের সঙ্গে যুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যখন জুমার নামাজ শেষ হয়ে যাবে তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর।’ (সুরা জুমুয়াহ, আয়াত ১০)।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

জু’মআর নামাযঃ  ফযিলত ও গুরুত্ব

মাওলানা সাইফুল ইসলামশি,ক্ষক: মাদরাসাতুল হিকমাহ,ঢাকা: ২৪ ফিট, রসূলবাগ, কদমতলী, ঢাকা   একজন ব্যক্তি ঈমান আনার ...