সর্বশেষ সংবাদ
Home / সারাদেশ / রংপুর বিভাগ / কুড়িগ্রামে ৪১ ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

কুড়িগ্রামে ৪১ ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী, নুনখাওয়া ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপরদিকে দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী ৪১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রাম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যমতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় থাকলেও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে দুর্যোগ কবলিত হয়েছে ৬২ হাজার দুইশ মানুষ।

শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৮ সেন্টিমিটার ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং দুধকুমার নদের পানি বেড়ে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র।

বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বানভাসি পরিবারগুলো বসতবাড়িতে বাঁশের মাচান, নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে দুর্ভোগকে সঙ্গী করে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অধিকাংশ পরিবারে ৫দিন ধরে চুলা জ্বলছে না। চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে গবাদিপশু নিয়ে সংকটে পড়েছে বানভাসীরা।

বানভাসীদের অনেকেই গবাদি পশুসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের কাঁচা-পাঁকা সড়কগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বানভাষীদের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবার এবং জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে বন্যা কবলিতরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে এবং দুধকুমারের ১টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যন্য নদ নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসীদের জন্য ৯ উপজেলায় ২৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার- যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, স্থানীয় প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে থেকে দুর্ভোগ কমাতে সবধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার রংপুর বিভাগীয় বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুর উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন এবং বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।

তিনি আরও জানান, জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে ৮ উপজেলা বন্যাকবলিত। ৪০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন এক হাজার ২৪৬জন। শুক্রবার ৭ উপজেলায় ২ হাজার ৮৫০টি পরিবারের মাঝে ২৮ মে.টন চাল বিতরণ করা হয়। এছাড়া শুকনো খাবার, তেল, ডালসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

মিঠাপুকুরে আনসার ও ভিডিপি’র উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ  ও গাছের চারা বিতরণ

মিঠাপুকুর প্রতিনিধি :   “শান্তি শৃঙখলা উন্নয়ন নিরাপত্তায় সর্বত্র আমরা”-এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে ...