সর্বশেষ সংবাদ
Home / জাতীয় / একরামের স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলেছিলেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিচারের অপেক্ষায় পরিবার
Oplus_0

একরামের স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলেছিলেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিচারের অপেক্ষায় পরিবার

 

কক্সবাজার প্রতিনিধি ও টেকনাফ সংবাদদাতাঃ

কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর একরামুল হক। পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ায় বাবার ভিটাতে একটি অসম্পন্ন দোতলা জরাজীর্ণ বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন।

নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন পরোপকারে। করতেন মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কিন্তু ২০১৮ সালের ২৬ মে রাতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে নাটকীয় ও নারকীয়ভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে মারা যান তিনি।

হত্যার আগে আদরের মেয়ের সঙ্গে কথোপকথন ও তাকে করা গুলির শব্দ, গুলি খেয়ে তার গোঙানির অডিও রেকর্ড প্রকাশের পর তার মৃত্যু নিয়ে চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়। দাবি উঠেছিল হত্যাকারীদের বিচারের।

কিন্তু ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও তৎকালীন নানা প্রতিবন্ধকতায় হত্যার মামলাটি পর্যন্ত করতে পারেনি পরিবার। এখনো বিচারের অপেক্ষায় দিন পার করছেন তারা।

নিহত একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন, আমার স্বামী সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে ছিলেন। তবু মাদকের সঙ্গে জড়িয়েই তাকে হত্যা করা হলো। কী অপরাধ ছিল তার? কেন এমন নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হলো? ছয় বছরের বেশি সময় কেটেছে।

এখনো মামলাও করতে পারিনি। বিভিন্ন সময় নানাভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বিচার চাওয়ার কথা বলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (সাবেক সেতুমন্ত্রী) ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (সাবেক) আসাদুজ্জামান খান কামাল ফোন করে আমাকে চুপ থাকতে বলেছিলেন।

আমি চুপই ছিলাম। তবে এই অবিচারের কথা ভুলিনি, কখনো ভুলবো নাও। আমার স্বামী হত্যার বিচার আমৃত্যু চেয়ে যাব। এখন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়, এবার মামলা করব।

আয়েশা বলেন, হত্যাকাণ্ডে র‌্যাবের তৎকালীন মেজর রুহুল আমীন ও ডিজিএফআইয়ের সাকিব জড়িত— তখন র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের দায়িত্বরত যারা ছিলেন, তাদের আইনের আওতায় আনা গেলে এ হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসবে।

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মামলাটি এবার করব। আমি স্বামীকে আর মেয়ে দুটো (তাহিয়াত ও নাহিয়ান) তাদের বাবাকে খুনের হাত থেকে বাঁচাতে পারিনি বলে চাপা কষ্টে দিন পার করছি। তিনি আরো বলেন, বড় মেয়ে এইচএসসি পাশ করেছে, ছোট মেয়ে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে—তারা পৃথিবী সম্পর্কে বুঝে। দুই মেয়েও বাবা হত্যার বিচার পেতে মামলা করতে চায়—যাতে আর কোনো নিরীহ মানুষ এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, সবকিছু যেহেতু নতুন করে শুরু হয়েছে, সেহেতু একরাম হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হোক। আশা করছি, আমার মেয়েরা তাদের বাবা হত্যার বিচার পাবে।

 

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে নরসিংদীতে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মোঃএমরুল ইসলাম,জেলা প্রতিনিধি,নরসিংদীঃ বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে নরসিংদীতে র‍্যালি ও আলোচনা সভা ...