সর্বশেষ সংবাদ
Home / সারাদেশ / ঢাকা বিভাগ / আবেগ, অনুভূতি, প্রেম ও ভালোবাসার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

আবেগ, অনুভূতি, প্রেম ও ভালোবাসার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

শিক্ষা শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া জীবন ও যৌবনের উত্তাপে শুদ্ধ সংগঠন,সোনার বাংলা বিনির্মানের কর্মী গড়ার পাঠশালা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইতোমধ্যে ৭৪ বর্ষে পদার্পন করেছে।

১৯৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থায় যে কালো মেঘের আবির্ভাব হয়েছিল, সেই মেঘ সরাতে ১৯৮১ সালে প্রত্যাবর্তন করেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সেদিন প্রিয় নেত্রীর পাশে ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের অনন্য সম্মিলন ধর্ম নিরপেক্ষতা কীভাবে সমাজ জীবনকে বদলে দিতে পারে তা তিঁনি কলকাতা শহরে ছাত্র অবস্থায় রপ্ত করেন।

১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু ইসলামীয়া কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তিঁনি বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবনের প্রসঙ্গ উঠে আসলে ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসে স্মৃতি বিজড়িত বেকার হোস্টেলের প্রসঙ্গ। ১৯৪৭ সালের দেশভাগ হলে ভারত ও পাকিস্তান যথাক্রমে ১৪ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট নিজস্ব অস্তিত্ব লাভ করে এবং ভারত ও পাকিস্তানের নিকট নতুনভাে বিভক্ত বাংলা প্রদেশের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। হিন্দু অধ্যুষিত ‘‘পশ্চিম বঙ্গ’’ ভারত এবং মুসলিম অধ্যুষিত ‘‘পূর্ব বঙ্গ’’ পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়। বঙ্গবন্ধু তখন চিন্তিত হয়ে পড়েন এই ভেবে যে বাঙ্গালির প্রকৃত স্বাধীনতা দরকার পারধীনতার হাত থেকে মুক্তি পেতে। সেই চিন্তায় তিঁনি মনে করেছিলেন ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সংগঠনের কোন বিকল্প নেই। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ১৯৪৮ সালের ৪ ঠা জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে ফজলুল হক হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা কর্মী সদা জাগ্রত ও রাজপথে অতন্দ্র প্রহরী। বঙ্গবন্ধু বলেছেন “ ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস “ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ৫২ ভাষা আন্দলনের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ পরিশ্রমে ১৯৫৪ এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ১৯৫৮ এর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন,১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬এর ৬য় দফা নিয়ে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছড়িয়ে পড়া ও ৬ দফাকে বাঙ্গালির মুক্তির সনদ প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৬৯সালে গনঅভ্যুস্থানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাক বাহিনীদের পদত্যাগে বাধ্য করা,১৯৭০নির্বাচনে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা, মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসাবে দায়িত্বপালন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি প্রদানে ভুমিকা পালন করা, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সামরিক শাসনের অবসান ঘঠিয়ে সুষ্ঠু গনতান্ত্রিক অধিকারে পর্দাপন করার অধিকারসহ প্রতিটি আন্দলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান অনস্বীকার্য। ছাত্রলীগ মানেই গৌরব ও ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করা,ছাত্রলীগ মানেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, ছাত্রলীগ মানেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, গনতান্ত্রিক মুল্যবোধ, মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা, ছাত্রলীগ মানে কৈশরের স্বপ্ন,শৈশবের ভালোবাসা, যৌবনের প্রেম।কোন অন্যায় কাজ যেমন টেন্ডারবাজি , চাঁদাবাজি, কমিটি বানিজ্য, নিয়োগ বানিজ্য, সিট বানিজ্য, ভর্তি বানিজ্য বলে কোন শব্দের সাথে ছাত্রলীগ কোন কালে পরিচিত ছিল না,ভবিষ্যতেও থাকবেনা এই প্রত্যাশা করি। সময়ের সাহসী সন্তানেরাই ছাত্রলীগ করে, ছাত্রলীগ হলো লড়াই সংগ্রামের পাঠশালা অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ছাত্রলীগ মানেই ন্যায়ের পক্ষে স্বোচ্ছার,ছাত্রলীগ মানেই ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবির সাথে একাতœতা, ছাত্রলীগ মানেই রাজপথ থেকে মিছিল মিটিং, নবীনদের কাছে টানা, ছাত্রলীগ মানে অজানাকে জানা,জ্ঞানের গভীর সমুদ্রে পর্দাপন করা, ছাত্রলীগ মানেই নীতিবান আদর্শকে বুকে ধারন করে বেঁড়ে উঠা, ছাত্রলীগ মানেই নিয়মিত ছাত্রদের সংগঠন বিলাস অর্থ-বিত্ত, ক্ষমতা ব্যবহারের পথ কখনও ছাত্রলীগের পথ নয়। ১/১১ সময় দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ ছাত্র-শিক্ষক সবার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দুর্বার গন আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। যার ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব রাজবন্দি মুক্তিতে ২০০৮ সালে সুষ্ঠ নির্বাচন হয় এবং গণতান্ত্রিক সরকারের অগ্রযাত্রা ঘঠেঁ। যুদ্বাপরাধীদের বিচারকালীন সময় ছাত্রলীগ রাজপথ পাহারা দিয়েছিল যাতে কোন অশুভ শক্তি কোন সমস্যার সৃষ্টি না করতে পারে, অবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যুদ্বাপরাধীদের বিচার হয়। ১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্বে ছাত্রলীগের প্রায় ১৭ হাজার নেতা কর্মী শহীদ হন, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।১৯৬৯সালে ছাত্রসমাজ যে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে, যা গণঅভ্যুস্থানে পরিনত হয়। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ ছাত্রসমাজের পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন, যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করে। শুধু ভালো কর্মী হলেই চলবেনা, ভালো ছাত্রও হতে হবে অর্থাৎ নেতা কর্মীদের মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। করোনার মহামারির সময়গুলোতে দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছে ছাত্রলীগ, রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপি ৪ লাখ ৬৮ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৬ লাখ ৪৭ হাজার মাস্ক বিতরণ, ভাসমান মানুষ, পথশিশুসহ প্রায় ৪ লাখ ৫৬ হাজার নিম্নবিত্তের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। চালু করা হয়েছে হ্যালো ছাত্রলীগ যার মাধ্যমে দেশব্যাপী ২ লাখ ৯২ হাজার মানুষ সহায়তা পেয়েছে।

সারাদেশে অসহায় কৃষকদের মাঝে ১ লাখ ২৮ হাজার কেজি বীজ বিতরণ, প্রায় ২২ হাজার মানুষকে টেলিমেডিসিন সেবা, ৭৭ জনকে প্লাজমা,করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৬০ জনকে দাফন করা,কৃষকের ৯৬ হাজার শতাংশ জমির ফসল কাটায় সহযোগিতা, ফ্রি সবজি বাজার চালু করে সবজি বিতরণসহ প্রভৃতি উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড করেছে ছাত্রলীগ।

পরিশেষে বলব ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অনুপ্রবশকারী যেন টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য,ভর্তি বাণিজ্য প্রভূতি অসৎ কার্যাবলীর সাথে যুক্ত হতে না পারে যে দিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ভালো থাকুক প্রিয় ছাত্রলীগ।

লেখক: কামরুজ্জামান সোহাগ, সাবেক সহ-সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়।
চেয়াম্যান সলিউশন ফোর্স লিমিটেড।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

নরসিংদীর শিবপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ – ২০২৪ উদযাপিত

  মোঃএমরুল ইসলাম,জেলা প্রতিনিধি,নরসিংদীঃ নরসিংদীর শিবপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ – ২০২৪ পালন ...