সর্বশেষ সংবাদ
Home / অপরাধ / অনলাইন প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না

অনলাইন প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না

মোঃ রাকিব শেখ – বিশেষ প্রতিনিধি গাইবান্ধা::

 

দেশব্যাপী ইন্টরনেটের প্রসারের কারণে মানুষের অনলাইন নির্ভরতা বেড়েছে, পাশাপাশি বেড়েছে ই- কমার্সের জনপ্রিয়তাও। ফলে অনলাইনভিত্তিক কেনাকাটার বিভিন্ন সাইটে গিয়ে নানামুখী ফাঁদের খপ্পরে পড়ছেন ক্রেতারা। অযৌক্তিক দাম, গোপন মূল্য, বাড়তি চার্জ, ভুয়া রিভিউ, মিথ্যা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির প্যাঁচে পড়ার কথা জানায় অনেক ক্রেতা।

 

প্রতিনিয়তইই অনলাইনে বেচাকেনা নিয়ে প্রতারণার খবর পাওয়া যায়। সুযোগ সন্ধানী সাইটগুলো এমন সব পণ্যকে লক্ষ্যবস্তু বানায়, যেগুলো সচরাচর ক্রেতারা অনলাইনে খোঁজ করে। অনেকেই সার্চ দিয়ে এসব সাইটের চটকদার তথ্য দেখে ভেতরে ঢুকেন। সেখানে পণ্যের প্রশংসা সুলভ মন্তব্য দেখে পণ্য কেনার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠে। অর্ডার করার সময় বিভিন্ন চার্জের নামে নির্ধারিত দামের সঙ্গে বাড়তি মূল্য যোগ হয়। এছাড়া একটি পণ্য অর্ডার করে অন্য পণ্য পাওয়া বা নষ্ট জিনিস পাওয়ার বিড়ম্বনা তো রয়েছেই। তবে কেনাকাটা ছাড়াও অনলাইনে রয়েছে লোভনীয় অনেক ফাঁদ।

 

তিন থেকে ছয় মাসেই বিনিয়োগের টাকা দ্বিগুণ হবে কিংবা বিশেষ ছাড়ে প্রায় অর্ধেক মূল্যে দেওয়া হচ্ছে পণ্য- এরকম লোভনীয় অফার দেওয়া হয় অনলাইনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, নিজস্ব ওয়েবসাইট বা নানা অ্যাপ ব্যবহার করে চলে এরকম প্রচারণা। প্রলোভনে পড়ে প্রতারকদের ফাঁদে পা বাড়ান সরল মনের অনেকেই। প্রথম দিকে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য গ্রাহকদের বিনিয়োগের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়। অর্ধেক দামে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হয় গ্রাহকদের ঘরে।

 

এরপর সেই গ্রাহকদের দিয়েই প্রচারণা শুরু করে প্রতারক চক্রগুলো। ব্যবসা জমজমাট হয়ে গেলেই শুরু হয় টালবাহানা। বিনিয়োগের অর্থ ফেরত পেতে ধরনা দিতে হয় গ্রাহকদের। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও পাওয়া যায় না অর্ধেক দামের সেই পণ্য। এর মাঝে চম্পট দেয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, একসময়ে যুবক, ডেসটিনি বা ইউনিপেটুইউ নামে এমএলএম প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি সাধারণ মানুষকে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করেছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে প্রতারকরা কৌশল পাল্টেছে। সারা দুনিয়ায় ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এখানে প্রতারক চক্রগুলো ই-কমার্সের নামে প্রতারণা শুরু করেছে।

 

আর পিরামিড স্কিম বা এমএলএমের নামেও প্রতারণা চলছে অনলাইনে। বিভিন্ন অ্যাপ বানিয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ লভ্যাংশ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ লুটে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, অনলাইনে প্রতারণায় শীর্ষে রয়েছে ই-কমার্স ও এমএলএম ককোম্পানি। করোনার সময় প্রথম ই-কমার্সের নামে প্রতারণার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালির প্রতারণা নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 

এরপর একে একে ধামাকা শপিং, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুমবুম, আদিয়ান মার্ট, নিড ডট কম, কিউকম, রিংআইডি, দালাল প্লাস, এসপিসি ওয়ার্ল্ড, মাইক্রোট্রেড, র্যাপিড ক্যাশ, নিরাপদ শপ, আলিফ ওয়ার্ল্ড, জিকো বাজার গ্লোবাল গেইন, এমাসবিডি, আনন্দবাজার, ২৪টিকিট, ফাল্গুন শপবিডিসহ শতাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার পাশাপাশি অনেকগুলোর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

এই রাজশাহী অফিস: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার দায়ে গণপিটুনিতে ...